চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলায় আসামীদের দেশত্যাগ ঠেকাতে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানা। তার মৃত্যুর ২৯ বছর পর তার সাবেক স্ত্রী সামিরা হকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। গতকাল শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক। তিনি জানান, মামলাটি আদালতের নির্দেশে পুনরায় তদন্তাধীন থাকায় আসামীরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে, সে জন্য রমনা থানা থেকে সংশ্লিষ্ট সব বিমান ও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। গোলাম ফারুক বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত এখন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। তাই কোনো আসামী যেন দেশ ছাড়তে না পারেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে গোলাম ফারুক বলেন, ফৌজদারি মামলার আসামীদের ধরতে কোনো বাধা নেই। মামলার ১১ আসামীর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দেশের বাইরে থাকতে পারেন। দেশে থাকা আসামীদের শনাক্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মোবাইল ট্র্যাকিংসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আসামীরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন, সে জন্য তাদের নামসহ তথ্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ওসি গোলাম ফারুক বলেন, আদালতের নির্দেশে সালমান শাহ হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে। এতে ১১ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে। মামলা রুজুর পর তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে গত ২১ অক্টোবর মধ্যরাতে রাজধানীর রমনা থানায় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়। মামলার বাদী হলেন তার মামা আলমগীর কুমকুম। এজাহারে আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হককে। এছাড়া ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডনসহ আরও কয়েকজনের নাম রয়েছে। মোট ১১ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে, পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকেও আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ তদন্তযাত্রা, যা প্রায় তিন দশক ধরে অপমৃত্যু মামলা হিসেবেই চলতে থাকে। পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন বলে মত দেয়। তবে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী শুরু থেকেই ওই প্রতিবেদন মানতে অস্বীকৃতি জানান এবং দাবি করে আসেন, তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।