কার্যক্রমে নিষিদ্ধে থাকা আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থায়নের অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ লাভলু মোল্লাহ শিশিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া গতকাল মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে বেলা পৌনে ১টায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ওসি মো. খালিদ মনসুর।

ওসি মনসুর বলেন, কিছুদিন আগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে, যেখানে লাভলু মোল্লাহর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিলে অর্থ যোগানের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছি।

এছাড়া পুলিশ বলছে, সোমবার শেখ হাসিনার রায়ের পর লাভলু তার ফেইসবুক প্রোফাইলে শেখ হাসিনার ছবিযুক্ত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করেন। সেখানে লেখা ছিল জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, আই ডোন্ট কেয়ার। এরপর মধ্যরাতে কিছু শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম তার বাসায় যান। লাভলু মোল্লাহর ওই পোস্ট নিয়ে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে রাতে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয় বলে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তারের পর গতকাল মঙ্গলবার লাভলু মোল্লাহ শিশিরকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই আলামিন। লাভলু মোল্লাহর পক্ষে তার আইনজীবী জি.এম কাওসার-উল ইসলাম সোহেলসহ কয়েকজন জামিন চেয়ে আবেদন। শুনানি নিয়ে আদালত তার জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেয় বলে প্রসিকিউশনের এসআই জিন্নাত আলী। রিমান্ডের আবেদন না থাকায় তাকে এজলাসে তোলা হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনজীবী জি.এম কাওসার-উল ইসলাম সোহেল।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, গত ৩১ মে ভোর সাড়ে ৬টার শাহবাগের পরীবাগ এলাকায় কার্যক্রমে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ মিছিল করে। অন্তর্বতীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের উদ্দেশে স্লোগান দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ১ জুন শাহবাগ থানায় মামলা করেন এসআই কামাল উদ্দিন মিয়া। লাভলু মোল্লাহ এই মামলার আসামী।

এদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণদ- দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণা করে।

হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও একই সাজা হয়েছে। অভ্যুত্থানের সময় পুলিশ বাহিনীর নেতৃত্বে থাকা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে দেওয়া হয়েছে ৫ বছরের সাজার লঘুদ-।