জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর)দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায় পাঠ শুরু করেন।
রায় ঘোষণাকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ প্রসিকিউশনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ট্রাইব্যুনালের বাকি দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এ মামলায় হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ, আর শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা।
তদন্ত প্রতিবেদনের মূল অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ও পরিকল্পিত দমন–পীড়নের সরাসরি নির্দেশ দেন, যা গণহত্যা, খুন এবং নির্মম নির্যাতনের পর্যায়ে পৌঁছায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী, আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠন—বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে নির্দেশ দেন। এসব নির্দেশের ফলে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন এবং ২৫ হাজারের বেশি আহত, অঙ্গহানি বা নানামুখী নির্যাতনের শিকার হন।
৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা ছাত্রদের আশুলিয়ায় গুলি করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়—যার ভেতরে একজন জীবিত অবস্থায় ছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।