২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক নানা উৎস থেকে ১৬ হাজার ৩২৭টি অভিযোগ পেয়েছে। এসব নানা অভিযোগের মধ্য থেকে ১২ হাজার ৮২৭টি অভিযোগ আমলে নিয়েছে আদালত। বাকী ৩ হাজার ৫০০ অভিযোগ চেয়ারম্যানের দফতরসহ সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে তদন্তানাধীন রয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
একই সময় দুদক দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য, প্রাক্তন মন্ত্রী, এমপি, আমলা, পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মোট ৩৯৯টি মামলা দায়ের করেছে। তার মধ্যে ৩২১ টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা দুর্নীতি মামলার তালিকায় এখন সরকারি কর্মকর্তাদের নাম শীর্ষে, এরপরই রয়েছে বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং জনপ্রতিনিধিরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্নীতি করার পর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি না দেওয়ায় সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তারা দ্রুত শাস্তির জন্য দুদকের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর, দুদক সারা দেশে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান তীব্রতর করে।
গত বছরের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে দুদক। বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর চেষ্টায় গতি আনতে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে লন্ডন সফর করেন দুদক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। ১৬ জুন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এখন যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদের বিরুদ্ধেও যদি স্পেসিফিক (সুনির্দিষ্ট) অভিযোগ আসে, আমরা অবশ্যই অনুসন্ধান করব। শুধু রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে কেউ অভিযুক্ত হবেন না। আমরা প্রমাণভিত্তিক কাজ করি।
সূত্র জানায়, অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে এক বছরে মোট ৩৯৯টি মামলা করেছে দুদক। এসব মামলায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ এক হাজারের বেশি প্রভাবশালী ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের আগষ্ট থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১১ মাসে ৭৬৮টি অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে। এ সময় মামলা হয়েছে ৩৯৯টি। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে। তদন্ত শেষে ৩২১টি মামলায় (৮০ শতাংশের বেশি) অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এসব চার্জশীটে অভিযুক্ত করা হয়েছে ৫৪৯ জনকে। তাদের মধ্যে সরকারী চাকরীজীবী ৩৪৩ জন, ব্যবসায়ী ১১৪ জন আর রাজনীতিবিদ ৯২ জন।
সূত্র মতে, আগস্ট/২৪ থেকে জুন/২৫ পর্যন্ত ১১ মাসের অনুসন্ধানকালে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করা হয়েছে ২২৩টি। ৯টি অনুসন্ধানের পরিসমাপ্তি ঘটেছে একই সময়ে।
দুদক বলছে, ক্ষমতার অপব্যবহার, বড় বড় প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি করে অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দ নেওয়া ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এসব মামলা করা হয়েছে। কারও কারও বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দখলের অভিযোগ রয়েছে। আসামিদের কেউ কেউ টাকা পাচার করে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন ও কানাডায় একাধিক বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, এমন অভিযোগেও মামলা হয়েছে। শেয়ারবাজারে জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের হাজার কোটি টাকা লোপাট, প্রভাব খাটিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। কারও কারও বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দখলের অভিযোগ রয়েছে। আসামিদের কেউ কেউ টাকা পাচার করে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন ও কানাডায় একাধিক বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, এমন অভিযোগেও মামলা হয়েছে।
১১ মাসে ১৬ হাজার ৩২৭ অভিযোগ : সূত্র জানায়, দুদকের হাতে ১১ মাসে আসা অভিযোগগুলোর মধ্যে ২০২৪ সালের আগস্টে ৮৪৭টি অভিযোগ আমলে নেয়া হয়। এরপর সেপ্টেম্বরে ৮৯৮টি, অক্টোবরে ১৬৮৭টি, নবেম্বরে ৩৪০৬টি, ডিসেম্বরে ৬৬টি, চলতি বছরের জানুয়ারীতে ৩৫০টি, ফেব্রুয়ারিতে ৫৫১টি, মার্চে ৯৫১টি, এপ্রিলে ৮০৩টি, মে মাসে ১৯৩৪ টি ও সর্বশেষ জুন মাসে ১৩৩৪টি অভিযোগের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করে দুদক।
সূত্র মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৫৩০টি অভিযোগের তদন্ত করেছে দুদক। এরমধ্যে ১৬১ জনের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরনীর নোটিশ জারী করা হয়। ২৫৫টি মামলার মধ্যে ১৭৫টির চার্জশীট দেয়া হয়। চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে ৪১টি মামলায়। অভিযুক্তদের মধ্যে ২১১ জন সরকারি চাকরিজীবী, ৩২৯ জন বেসরকারি চাকরিজীবী, ৬৮ জন রাজনীতিবিদ, ৬৪ জন ব্যবসায়ী, ১৪ জন জন জনপ্রতিনিধি এবং ১২৯ জন অন্যান্য পেশার।
যোগাযোগ করা হলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আখতার হোসেন দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, দুদক আইন অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তাদের অপরাধের দিকে নজর দিচ্ছে, কারণ দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্তদের বেশিরভাগই সরকারি কর্মচারী। তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির পাশাপাশি অন্যান্য ব্যক্তিদের দুর্নীতি রোধে দুদক সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে।
দুর্নীতির মামলার প্রবণতা সম্পর্কে জানতে চাইলে, দুদকের প্রাক্তন মহাপরিচালক মোঃ মঈদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশে দুর্নীতির জন্য কাউকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় না; বরং তারা সামাজিক মর্যাদা অর্জন করে এবং এর ফলে সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার ঘটনা বাড়ছে।’ তিনি আরও বলেন, দুদক বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছে, কিন্তু তারা অর্থ পাচার এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে খুব বেশি কাজ করছে না, যা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির একটি কারণও। দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশও দুর্নীতির জন্য সহায়ক উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী আইন রয়েছে কিন্তু দুদকের কার্যকারিতার অভাব এবং সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলির সদিচ্ছার অভাবের কারণে দুর্নীতি রোধ করা যাচ্ছে না।
হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা : শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে আলাদা কমিটি করেছে দুদক। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও তাদের পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তথ্য গোপন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করা হয়। ছয়টি মামলাতেই দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। মামলাগুলো এখন আদালতে বিচারাধীন।
দুদক সূত্র জানায়, ১০ কাঠা করে মোট ২০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি দুটি মামলা করা হয়। একই অভিযোগে শেখ রেহানা এবং তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক (রূপন্তী) ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। এই তিন মামলায় রেহানার আরেক মেয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। একটি আবাসন প্রতিষ্ঠান থেকে ‘ঘুষ’ হিসেবে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে টিউলিপের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। মামলাটি এখন তদন্তাধীন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট দুদক সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালকের পদ নেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে ব্যাংকের করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) ফান্ডের প্রায় ৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আরেকটি মামলা হয়েছে। এই দুটি মামলা তদন্তাধীন। এ ছাড়া সূচনা ফাউন্ডেশনের কর ফাঁকির অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, ১০ কাঠা করে মোট ২০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি দুটি মামলা করা হয়। একই অভিযোগে শেখ রেহানা এবং তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক (রূপন্তী) ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের আর্থিক দুর্নীতি অনুসন্ধানে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা বলেন, রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দর, যশোর ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরে উন্নয়ন প্রকল্পের নামে দুর্নীতি ও সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের তিনটি বিমানবন্দরের চার প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। পাশাপাশি গাজীপুরে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বাগানবাড়ি নিয়েও অনুসন্ধান চলছে। শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বেপজা, বেজার আটটি প্রকল্পসহ বড় বড় প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগেরও অনুসন্ধান করছে দুদক।
দুদক বলছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান, দেশের বিভিন্ন স্থানে ম্যুরাল স্থাপন ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুর্নীতি ও গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা শপিং কমপ্লেক্সে দোকান বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ নিয়েও তারা কাজ করছে এবং দেশের বাইরে কেম্যান আইল্যান্ডে ৩০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।
দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জব্দের আদেশ দেওয়া সম্পদের মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। দেশে ও বিদেশে এসব সম্পত্তি রয়েছে।
অবৈধ সম্পদ জব্দ : বিগত সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ী ও সরকারি চাকরিজীবীরা দেশ-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এসব সম্পদ এখন তারা বেচে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেকেই বিদেশ থেকে বাংলাদেশে তাদের সম্পত্তি বিক্রি করতে কাউকে কাউকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিচ্ছেন বলে দুদক জানতে পেরেছে।
মামলার তদন্ত ও বিচার শেষ হওয়ার আগে যাতে এসব অবৈধ সম্পদ কেউ বেচতে না পারেন, সে জন্য সম্পদ জব্দ করে রাখায় তৎপর দুদক। গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জব্দসংক্রান্ত ৭৪টি আদেশ দিয়েছেন।
দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জব্দের আদেশ দেওয়া সম্পদের মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। দেশে ও বিদেশে এসব সম্পত্তি রয়েছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মোট ৫৮০টি বাড়ির খোঁজ পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে ৩৪৩টি যুক্তরাজ্যে, ২২৮টি সংযুক্ত আরব আমিরাতে (এইউই) এবং ৯টি যুক্তরাষ্ট্রে।
১৬ জুন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান (সানভীর) ও কো-চেয়ারম্যান সাদাত সোবহানের সম্পদ জব্দ করতে যুক্তরাজ্যে চিঠি দিয়েছে দুদক। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের সম্পদ জব্দেও যুক্তরাজ্যের এনসিএকে চিঠি দিয়েছে দুদক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহিন সিদ্দিকের বাগানবাড়ি, ফ্ল্যাট ও বিপুল জমির খোঁজ পেয়েছে দুদক। ২৪ বিঘা জমি এবং ৪টি ফ্ল্যাট ও ১টি ফ্ল্যাটের একাংশ আদালতের আদেশে জব্দ করেছে দুদক।