সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ থেকে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় কত টাকার আর্থিক হয়েছে এবং পরিবেশগত কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে লুট হওয়া পাথর সাতদিনের মধ্যে আগের জায়গায় ফেলতে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী সাতদিনের মধ্যে কমিটি করে তদন্ত করার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ থেকে সাদাপাথর লুটকারীদের তালিকা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে গতকাল রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ নিজে। সিলেটের পর্যটন এলাকা ভোলাগঞ্জ থেকে সাদাপাথর লুটের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
আদেশের বিষয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, পাথর সিলেটের ভোলাগঞ্জে অবৈধভাবে পাথর (সাদা পাথর) উত্তোলন এবং তা সরিয়ে ফেলার ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের তালিকা প্রস্ততি করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। সঙ্গে সঙ্গে জড়িতদের কাছ থেকে কেন ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে অবস্থিত সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র থেকে পাথর উত্তোলন করে বিক্রি করার অভিযোগ ওঠে। এতে পর্যটনকেন্দ্রের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট পাথর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন এবং জড়িতদের চিহ্নিত করতে তালিকা চেয়েছেন। আদালতের এ নির্দেশনায়, পাথর উত্তোলন এবং বিক্রি করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। হাইকোর্ট এ নির্দেশ দিয়েছেন, কারণ সিলেটের ভোলাগঞ্জে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে সাদাপাথর এলাকাটিকে ধ্বংস করা হচ্ছিল। আদালত মনে করে, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তাই, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িতদের একটি তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট, যেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এছাড়া আদালত নির্দেশ দিয়েছেন যে, অবৈধভাবে উত্তোলন করা পাথরগুলো সাতদিনের মধ্যে আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিতে হবে। এতে করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে এবং সাদাপাথর এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা যাবে।