আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথমবারের মত জবানবন্দি দিয়েছেন জুলাই গণআন্দোলনের সময় মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বপালনকারী একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আশরাফুল ইসলাম। জবানবন্দিতে তিনি জানান, ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় পুলিশের এডিসি আখতারের নির্দেশে প্রয়োজন ছাড়াই সাউন্ড গ্রেনেড, গ্যাস গান ও শর্টগান দিয়ে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। অধস্তন পুলিশ অফিসার ও সদস্যরা গুলি করতে না চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। ‘তোরা সরকারের বেতন রেশন খাস না? গুলি করবি না কেন? তোদের চাকরী খেয়ে নিবো’ বলে হুমকি দেন তিনি।
গণহত্যা মামলায় পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি প্রসিকিউশনের পক্ষে ৩৯তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে করা মামলায় তিনি সাক্ষী দিয়েছেন। এই মামলায় পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এ্যাপ্রুভার হয়ে রাজসাক্ষী দিয়েছেন। মামুনও এই মামলার আসামি।
সাক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি ১৯৯৪ সালের ১১ জানুয়ারি পুলিশে যোগ দিই। ২০০২ সালের ১৩ জুলাই থেকে ডিএমপি ঢাকায় যোগদান করে এখনও কর্মরত আছি। ২০১৮ সালে এসআই (সশস্ত্র) হিসেবে পদোন্নতি পাই। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট সঙ্গীয় এএসআই মুরাদ, নায়েক জসিম, কনস্টেবল মাহমুদুল, কনস্টেবল মেহেদী, কনস্টেবল নাসিরুল, কনস্টেবল মাহবুবসহ এক প্লাটুন এবং এসআই হেলাল তার ফোর্সসহ এক প্লাটুন অফিসার ও ফোর্স আমাদের নিজ নামে অস্ত্র, গুলি, বুলেট প্রুফ জেকেট ইত্যাদি সরঞ্জামাদিসহ পিওএম পুলিশ লাইন মিরপুর থেকে ভোরে রওনা হই। সকালে জরুরী আইনশৃঙ্খলা ডিউটির জন্য শাহবাগ থানায় যাই। সেখানে জানতে পারি যে, সকালে ডিএমপির কমিশনার হাবিবুর রহমান স্যার এবং যুগ্ম পুলিশ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী শাহবাগ থানায় উপস্থিত হয়ে উর্দ্ধতন পুলিশ অফিসারদের ঐদিন আন্দোলন দমনে গুলি করাসহ অন্যান্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
সাক্ষী জানান, ঐ দিন আন্দোলনকারীদের "মার্চ টু ঢাকা" কর্মসূচি ছিলো। সকাল ৯টার দিকে উক্ত দুই প্লাটুনসহ ডিএমপি থেকে আসা এক প্লাটুন পুলিশ, ১৩-এপিবিএন থেকে আসা এক প্লাটুন পুলিশ এবং রাজারবাগ থেকে আসা এক প্লাটুন নারী পুলিশসহ মোট পাঁচ প্লাটুন পুলিশ রমনা জোনের তৎকালীন এসি ইমরুল, শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর নিরস্ত্র মো. আরশাদ হোসেনকে তৎকালীন এডিসি শাহ আলম মোহাম্মদ আক্তারুল ইসলাম আইনশৃঙ্খলা ডিউটি নিয়ে ব্রিফ করেন। ব্রিফিং শেষে নারী পুলিশ ও ডিএমপি পুলিশের দুই প্লাটুন ছাড়া ৬০/৬৫ জন পুলিশ এডিসি শাহ আলম মোহাম্মদ আখতারুল ইসলাম, এসি ইমরুল, ইন্সপেক্টর মো. আরশাদ হোসেনের নেতৃত্বে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ডিউটিতে যান আশরাফুল ইসলাম। সেখানে গিয়ে এসি ইমরুলসহ কয়েকজন কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ঐ সময় এডিসি আক্তারুলের নির্দেশে কয়েকজন আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করে প্রিজন ভ্যানে শাহবাগ থানায় প্রেরণ করা হয়। এডিসি আক্তারুলের নির্দেশে এসি ইমরুল, ইন্সপেক্টর আরশাদ, আনুমানিক ১৫/২০ জন এপিবিএন সদস্য, ডিএমপির ১০/১৫ জন সদস্যের সাথে সাক্ষী আশরাফুলসহ তার সঙ্গীয় কনস্টেবল পিয়াস, আসিফ, আকাশ, নাসিরুলসহ পায়ে হেঁটে সাড়ে ১০টা ১১টার দিকে চানখারপুলে যান। চানখারপুল সংলগ্ন বংশাল ও চকবাজার এলাকা থেকে আসা ছাত্র-জনতা “মার্চ টু ঢাকা” কর্মসূচিতে শাহবাগের দিকে যেতে চাইলে এডিসি আখতারুল ইসলামের নির্দেশে কোনো প্রয়োজন ছাড়া সাউন্ড গ্রেনেড, গ্যাসগান ও শর্টগান দিয়ে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এই গুলি করা হয় চানখারপুল মোড়ে। এপিবিএন পুলিশকে দিয়ে শর্টগান ফায়ার করে ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়।
সাক্ষী বলেন, ঐ সময় এডিসি আখতারুল স্যার বলেন, ‘তোমাদের যাদের কাছে পিস্তল ও চায়না রাইফেল আছে তারা আন্দোলনকারীদের ফায়ার করে তাদের মেরে ফেলো’। তখন আমিসহ আরো কয়েকজন স্যারের এই অপ্রয়োজনীয় ও অবৈধ আদেশ পালন না করলে স্যার আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। তিনি আমাদেরকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তোরা সরকারের বেতন রেশন খাস না? গুলি করবি না কেন? তোদের চাকরী খেয়ে নিবো’। তবু আমি আমার পিস্তল দিয়ে ফায়ার করা থেকে বিরত থাকি। এরপর সঙ্গীয় কনস্টেবল মো. নাসিরুল ইসলাম এডিসি আখতারুল স্যারের সরবরাহ করা অতিরিক্ত গুলি ব্যবহার করে স্যারের নির্দেশে ও দেখানো মতে রাস্তায় বসে চায়না রাইফেলে গুলি লোড করে এবং আন্দোলনকারীদের টার্গেট করে বারবার ফায়ার করতে থাকে। এ সময় এডিসি আখতারুল ইসলাম স্যার এপিবিএন পুলিশের একজন কনস্টেবলের হাত থেকে চায়না রাইফেল কেড়ে নিয়ে এপিবিএন পুলিশের কনস্টেবল সুজন হোসেনের হাতে দেয়। যার হাত থেকে চায়না রাইফেল কেড়ে নেওয়া হয় সে গুলি করা থেকে বিরত ছিলো। পরে জেনেছি তার নাম অজয়।
আশরাফুল ইসলাম জবানবন্দিতে আরও বলেন, এরপর কনস্টেবল সুজন হোসেন চানখারপুল মোড়ে কখনো দাঁড়িয়ে, কখনো শুয়ে, কখনো হাঁটু গেড়ে বসে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করতে থাকে। তাছাড়াও এপিবিএনের কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমন তার নামে ইস্যুকৃত চায়না রাইফেল দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করে। আমি দেখতে পাই উক্তরূপ গুলিতে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে অন্য আন্দোলনকারীরা তাদের ধরাধরি করে নিয়ে যাচ্ছে। অতঃপর এসি ইমরুল স্যার, ইন্সপেক্টর আরশাদ স্যার এপিবিএনের ৫/৭ জন সদস্য নিয়ে নাজিমুদ্দিন রোডের বিভিন্ন গলিতে গুলি করতে করতে প্রবেশ করলে আমরা চায়না রাইফেলের গুলির শব্দ শুনতে পাই। এরপর শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে শুনতে পেয়ে দুপুরে চানখারপুল এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। তখন এডিসি আখতারুল স্যারের নির্দেশে টিএসটি মোড় হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে শাহবাগ থানার পিছন দিক দিয়ে থানায় প্রবেশ করি। এডিসি আখতারুল স্যারের নির্দেশে নিজ নিজ নামে ইস্যুকৃত অস্ত্রগুলো শাহবাগ থানার অস্ত্রাগারে জমা দেই। আমার সঙ্গীয় কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম তার নামে ইস্যুকৃত চায়না রাইফেলের ৪০ রাউন্ড গুলি জমা করলে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি- তুমি চানখারপুলে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করার পরেও ৪০ রাউন্ড গুলি কিভাবে জমা করলে? উত্তরে সে জানায়- এডিসি আখতারুল স্যার আমাকে অতিরিক্ত গুলি সরবরাহ করেছে। এরপর পোশাক পাল্টে সিভিল ড্রেস পরে এশার নামাজের পরে শাহবাগ থানার পিছন দিয়ে বের হয়ে পায়ে হেটে ছাত্র-জনতার সাথে মিশে মিরপুর পুলিশ লাইনে রাত ১১টার দিকে পৌঁছাই।
৩৭তম সাক্ষী মোহাম্মদ হাসান চট্টগ্রাম কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। গত বছরের ৯ জুলাই তিনি জানান, চট্টগ্রাম টাইগার পাস এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে মুরাদপুর, নতুন ব্রীজ, কক্সবাজারের চকরিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। ১৬ জুলাই দুপুরে আমার বহদ্দার হাটের বাসা থেকে আমিসহ ১০ জন বন্ধু আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য মুরাদপুরে যাই। সেখানে বাস থেকে নামার সাথে সাথে যুবলীগ নেতা নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, শৈবাল দাস সুমন, সাবেক মেয়র আ.জ.ম নাসিরসহ আরো অনেকে আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। নুরুল আজিম রনির হাতে পিস্তল, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের হাতে শর্টগান ও অন্যান্যদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিলো। আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। আন্দোলনকারীদের একটি গ্রুপ ষোল শহরের দিকে চলে যায়, আমরা কয়েকজন মোহাম্মদপুরের একটি গলিতে আটকা পড়ি। আমরা একটা বাসায় আশ্রয় নিই। তখন আনোয়ার নামে একজন আন্দোলনকারীর মাধ্যমে জানতে পারি যে, আন্দোলনকারী ফয়সাল আহম্মেদ শান্ত মুরাদপুর এলাকায় আক্রমণকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছে। ফয়সাল আহম্মেদ শান্ত আমার পূর্ব পরিচিত। ঐ বাসায় থাকাকালীন মহসীন কলেজের সমন্বয়ক বাপ্পী ভাইয়ের মাধ্যমে জানতে পারি যে, উক্ত সন্ত্রাসীরা ওয়াসিম আকরাম নামের একজন আন্দোলনকারীকে মুরাদপুর রাস্তায় কুপিয়ে এবং ফারুক নামের একজন কাঠ মিস্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা সন্ধ্যার দিকে ঐ বাসা থেকে বের হয়ে নিজ নিজ বাসায় চলে যাই। সেদিন রাতেই আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফয়সাল আহম্মেদ শান্ত এর লাশ দেখতে যাই। পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ দেখতে না দিলে আমরা ফিরে আসি। ১৮ জুলাই সকালে চট্টগ্রাম নতুন ব্রীজ এলাকায় আমিসহ ৫/৬ জন বন্ধু আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। সেখানে অবস্থান কর্মসূচি ছিলো। সেখানে আনুমানিক দুই হাজার আন্দোলনকারী আন্দোলন করছিলো। আমাদের সামনে বাকুলিয়া ও কর্নফুলী থানার পুলিশ এবং তাদের পিছনে আ.লীগের নেতা কর্মীরা ছিলো। পুলিশ আমাদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছুঁড়লে আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। আমরা কয়েকজন নিকটস্থ একটি ফিলিং স্টেশনের দিকে যাই। পুলিশ এবং আ.লীগের সদস্যরা আমাদের লক্ষ্য করে শর্টগান দিয়ে গুলি করলে আমি পিঠে গুলিবিদ্ধ হই। আমার পিঠে সর্বমোট ১১টি গুলি লেগেছিলো। পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। সেখানে ডাক্তাররা আমার শরীর থেকে ৮টি শর্টগানের গুলি বের করে। ৩টি গুলি এখনো আমার শরীরে রয়ে গেছে।
এ পর্যায়ে সাক্ষী তার পিঠে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ক্ষতচিহ্ন ট্রাইব্যুনালকে দেখান। পরে তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমে এ্যাম্বুলেন্স যোগে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে যাবার সময় হাসপাতালের গেইটে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ হাসপাতালে প্রবেশে বাধা দেয়। এরপর আমি একটি রিকশায় করে পার্কভিউ হাসপাতালে যাই। এই হত্যাকান্ড ও নির্যাতনের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশ প্রধান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার, অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দায়ী। আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দি দেওয়ার পর আল জাজিরা, বিবিসিসহ বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের উপর লেথাল উইপন ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে। আমি দোষীদের আইনানুগ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
৩৮তম সাক্ষী মো. সোহেল মাহমুদ বলেন, ৫ আগস্ট সকালে আমার বাড়ির পাশে শরীফ মেডিকেলের সামনে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে যাই। ঐ দিন কারফিউ ছিলো এবং ছাত্রদের ডাকা "মার্চ টু ঢাকা" কর্মসূচি ছিলো। আমি ১২টার সময় বাড়িতে চলে আসি। বাড়িতে থাকা অবস্থায় জানতে পারি শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়েছে। এরপর আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আবার শরীফ মেডিকেলের সামনে আসি। সেখানে গিয়ে দেখি হাজার হাজার লোক বিজয় মিছিল নিয়ে শরীফ মেডিকেলের দিকে আসছে। সেখানে উল্টা দিক থেকে মিছিলকে লক্ষ্য করে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি করলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আমিসহ কিছু লোক আমার বাড়িতে আশ্রয় নেই। আমি আমার চাচাতো ভাইয়ের বাড়ির ছাদে উঠি। কিছু লোক আমার ভগ্নিপতি হাফিজুর রহমান তপনের রিকশা গেরেজে আশ্রয় নেয়। রিকশার গেরেজটি আমার বাড়ির পাশেই। ছাদ থেকে দেখতে পাই কয়েকজন পুলিশ গেরেজ থেকে একজনকে তুলে নিয়ে যায় এবং তাকে আমার বাড়ির সামনের কবরস্থানের কাছে নিয়ে গুলি করে। সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পুলিশ লাশটিকে থানার দিকে নিয়ে যায়। পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ওসি আশরাফ এবং ডিবির এসি ছিলো। পরে জানতে পারি যে, যে গুলি করেছে তার নাম কনস্টেবল আকরাম। আর যাকে গুলি করেছে তার নাম হৃদয়। পরের দিন সকালে জানতে পারি পুলিশ লাশ নিয়ে পালিয়ে গেছে। এই হত্যাকান্ডের জন্য শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল, অন্যান্য মন্ত্রীগণ এবং স্থানীয় পুলিশ ও আ.লীগ নেতাকর্মীরা দায়ী। আমি ট্রাইব্যুানের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।