গ্রাহকের আমানত আত্মসাতের অভিযোগে আহমেদীয়া ফাইন্যান্স এন্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদের মালিকানাধীন ইউরো স্টার টাওয়ার নামের একটি ১০তলা বাণিজ্যিক ভবনটি ঢাকার কাফরুলে। সিআইডির ভাষ্য ভবনটির বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
গেল ১৬ জুলাই আদালত ভবনটি ওই ক্রোকের আদেশ দিয়েছিল, যার প্রেক্ষিতে সেটি ক্রোক করা হয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সিআইডি। সিআইডি বলছে, অভিযুক্ত মনির আহমেদ ২০০৫ সালে আহমেদীয়া বহুমুখী সমবায় সমিতি নামে ঢাকা জেলা সমবায় সমিতি থেকে নিবন্ধন নেন (নিবন্ধন নম্বর-৬৪৮)।
২০০৬ সালে নাম পরিবর্তন করে আহমেদীয়া ফাইন্যান্স এন্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে পুনঃনিবন্ধন নেন (নিবন্ধন নম্বর-৫৮)।
সমিতির মূল উদ্দেশ্য ছিল সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় ও শেয়ার আমানত সংগ্রহ করে তা থেকে সদস্যদের ঋণ দেওয়া এবং তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা। প্রতিষ্ঠার সময় সদস্য সংখ্যা ছিল ২০ জন, যা ২০১৮ সালের অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী দাড়ায় ২১ জনে। সদস্যদের মাসিক চাঁদা ছিল ২ হাজার টাকা করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী সমিতিটি শুধু সদস্যদের মধ্যেই ঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা থাকলেও, অভিযুক্ত মনির আহমেদ প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে জনসাধারণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। মিরপুর, ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, মহাখালী, কাফরুলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার সহস্রাধিক মানুষের কাছ থেকে অধিক মুনাফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ৫৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে নিজের নামে বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করেন মনির। এ ঘটনায় মনিরসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের নভেম্বরে কাফরুল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করা হয়।
মামলার তদন্ত চলাকালে ৮.৪৭ শতাংশ জমির উপর নির্মিত ইউরো স্টার টাওয়ারের সন্ধান পায় সিআইডি। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৬ জুলাই আদালত ভবনটি ক্রোকের আদেশ দিলে সেটি ক্রোক করা হয়। গ্রাহকের আমানতের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা ওই মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে বলেও জানিয়েছে সিআইডি।