রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফারুক হোসেন নামে একজন ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সব আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক জুলফিকার উল্লাহ এ চাঞ্চল্যকর মামলার রায় ঘোষণা করেন।

এই মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, রাজশাহী মহানগরীর তৎকালীন আমির আতাউর রহমান, রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সেক্রেটারি মোবারক হোসেনসহ ১১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এই মামলাকে আওয়ামী লীগ সরকার দমন-পীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জামায়াত ও শিবিরের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে আসামী করে। এর মধ্যে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে চরম অপমানকর ব্যবস্থায় ঢাকা থেকে রাজশাহীর আদালতে উপস্থিত করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম জানান, সাক্ষ্য-প্রমাণে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সবাইকে খালাস দিয়েছেন। মামলার ১১৪ আসামীর মধ্যে ৯ জন মারা গেছেন এবং জীবিত ১০৫ জনের মধ্যে রায় ঘোষণার সময় ২৫ জন উপস্থিত ছিলেন। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহ মখদুম হল এলাকায় ছাত্রলীগ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় ফারুক হোসেন নামে এক ছাত্র নিহত হন। পরদিন তার লাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে মতিহার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় জামায়াত-শিবিরের ৩৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জনকে আসামী করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৮ জুলাই পুলিশ ১২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর বিচারপ্রক্রিয়া শেষে অবশেষে আজ এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, ‘রায়ে খুশি-অখুশি এখনই বলা যাবে না। রায়ের কপি হাতে পেলে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হবে। তবে শুরু থেকেই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রভাবিত ছিল এবং প্রকৃত অপরাধীরা আড়ালে থেকে গেছে বলে ধারণা করা হয়।’