অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান একাংশের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। সোমবার ঢাকার ভারপ্রাপ্ত মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ ইব্রাহিম মিয়া এ আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম। তিনি জানান, জিএম কাদের ও তার স্ত্রীর বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গত রোববার আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিম।

আবেদনে বলা হয়, রংপুর-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। জিএম কাদের ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং দেশের বাইরে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। দুদক জেনেছে, জিএম কাদের ও তার স্ত্রী সম্পদ হস্তান্তর করে দেশ ছেড়ে পালাতে পারে। আর তা হলে অভিযোগের অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে তাদের বিদেশ গমন ঠেকানো দরকার।

আওয়ামী লীগের সরকারের তিন মেয়াদে বিরোধী দলে বসা জাতীয় পার্টি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিপাকে পড়ে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জি এম কাদেরকে খুব একটা প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

১৯৯৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া জি এম কাদের জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি অংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যের ‘পাপ’ থেকে দলকে মুক্ত করতে সম্প্রতি জিএম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর উদ্যোগ নেন।

গত ৯ অগাস্ট জিএম কাদের অংশকে বাদ রেখে রওশন এরশাদপন্থিদের নিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মো. মুজিবুল হক চুন্নুর আরেক অংশের ঐক্য হয়েছে; সম্মেলনে নতুন কমিটিও গঠন করেছে এক হওয়া এ দুই অংশ। সম্মেলনে দলের আগের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে এই অংশের চেয়ারম্যান এবং কো-চেয়ারম্যান ও এক সময়ের সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নির্বাচন করা হয়েছে। এছাড়া কাজী ফিরোজ রশিদকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবং মো. মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

জিএম কাদেরের স্ত্রী একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন-৪৫ এর সাংসদ ছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসন থেকে নির্বাচন করে তিনি পরাজিত হন। তখনকার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এটিসহ মোট ২৬টি আসনে ছাড় দিয়েছিল।