মৌলভীবাজার সংবাদদাতা: মৌলভীবাজারে শনিবার ফেসবুকে খলিফা হযরত উমর (রা.) এবং সাহাবী হযরত মুয়াবিয়া (রা.)-কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতমূলক মন্তব্য করেন নারী আইনজীবী উমায়রা। এদিকে কটূক্তির প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে সর্বদলীয় ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশ জানায়, উমায়রা ইসলাম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম ধর্ম, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.), খলিফা হযরত উমর (রা.) ও অন্যান্য সাহাবিদের নিয়ে কটূক্তিমূলক ও উস্কানিমূলক পোস্ট করে আসছিলেন। সর্বশেষ শনিবার দুপুরে তিনি আবারও সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে আপত্তিকর ভাষায় পোস্ট দিলে তা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নজরে আসে। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে মারাত্মক আঘাত লাগে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর জেলা শহরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মৌলভীবাজারের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা, বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন, আলেম-ওলামা ও সর্বদলীয় ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযুক্তের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ জানানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। শনিবার রাত সাড়ে ৭টায় পুলিশ উমায়রাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে রাতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এবং সাইবার সুরক্ষা আইনের ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি গাজী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম ও সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগে উমায়রা ইসলামকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে অভিযুক্ত নারীর কিছু ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা গেছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা। রোববার বিকেলে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব চত্ত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নাস্তিক উমায়রার ইসলাম বিদ্বেষী কটুক্তির প্রতিবাদ, তার সর্বোচ্চ শাস্তি ও ব্লাসফেমি আইন বাস্তবায়নের দাবি করেন তাওহীদি জনতা। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, মাওলানা জামিল আহমদ আনসারি, শেখ মো. আব্দুল হক, মাওলানা আহমদ বিলাল প্রমুখ। সর্বদলীয় ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা আহমদ বিলাল বলেন, সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে কটূক্তি কোনোভাবেই বরদাশত করা যায় না। এ ধরনের কটূক্তি বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, যেন ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।