রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল থেকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় চালু এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি চাওয়ায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা ও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আরেক ব্যক্তি জানিয়েছেন। রয়টার্স।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নে মস্কোর সঙ্গে বড় পরিসরে আলোচনা শুরু করতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন। তার অংশ হিসেবে আগামী দিনগুলোতে মার্কিন কর্মকর্তারা যেন রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন, সেই পরিবেশ তৈরি করতে যেসব নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা যায় সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করতে পররাষ্ট্র দপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে হোয়াইট হাউস।

সে অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক দপ্তরগুলো নির্বাচিত রাশিয়ার নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য একটি প্রস্তাব তৈরি করছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেতে যাওয়া সম্ভাব্য রুশ নাগরিকদের তালিকায় দেশটির কিছু ‘অলিগার্ক’ও রয়েছেন।

নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করা কর্মকর্তারা প্রায়ই এ ধরনের কাগজপত্র তৈরি করেন। তবে সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের এ রকম একটি অনুরোধ ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসনের মস্কোর সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সদিচ্ছাকে তুলে ধরছে।

এই নিষেধাজ্ঞা তোলার বিনিময়ে ওয়াশিংটন সুনির্দিষ্টভাবে মস্কোর কাছ থেকে কী চাইতে পারে, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি। হোয়াইট হাউস, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং ওয়াশিংটনে রুশ দূতাবাসের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলেও কেউই তাৎক্ষণিকভাবে তাতে সাড়া দেননি।

ক্রেমলিন গত বছর জো বাইডেন প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ‘শূন্যের নিচে’ বলে বর্ণনা করেছিল। ডেমোক্র্যাট নেতা বাইডেন অস্ত্র ও অর্থসহায়তা দিয়ে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তারা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালানোর শাস্তি হিসেবে দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।

তবে দ্রুতই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেওয়া ট্রাম্প শিগগির মস্কোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার জন্য মার্কিন নীতির পরিবর্তন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান পরিবর্তন দৃশ্যমান হয় গত ১২ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে ফোন করার মধ্য দিয়ে। এরপর সৌদি আরব ও তুরস্কে বৈঠকে বসেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর গত জানুয়ারিতে হুমকি দিয়েছিলেন যে পুতিন যদি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সমঝোতা করতে অনীহা প্রকাশ করেন, তাহলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু অতি সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেছেন।