মোহাম্মদ জাফর ইকবাল : স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কমিশন গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রশাসন ক্যাডারের হাতে থাকায় কমিশনগুলোর মতামত ও জনকল্যাণকর সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ওপর এতটাই নির্ভরশীল হতে দেখা গেছে, তারা প্রশাসন দ্বারা প্রায় শাসিতই হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আগের নাম ছিল সংস্থাপন মন্ত্রণালয়। কিন্তু নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়! আগের সরকার কখনোই বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের লাগাম টেনে ধরার সাহস করেনি তাদের দুর্বলতার কারণে। কিন্তু ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর বর্তমান সরকার যেসব সংস্কার কমিশন গঠন করে, এর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সবচেয়ে বেশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই কমিশন থেকে জনগণের প্রত্যাশা বেশি। কারণ এই কমিশন মোহমুক্তভাবে জনগণের সেবার মানের বিষয় চিন্তা করে সীমাহীন ক্ষমতার প্রশাসনকে ভারসাম্যপূর্ণ ও জনবান্ধব প্রশাসনে রূপান্তরে সংস্কার করবে, এটাই সবাই বিশ্বাস করে।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ সরকার জনগণের সেবা নিশ্চিতে সময় নির্ধারণ করে সিটিজেন চার্টার প্রস্তুত করলেও সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী কোনো সেবা কোনো দপ্তরে পাওয়া যায় না বললেই চলে। সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের জন্য শুদ্ধাচার চর্চার পুরস্কার প্রদান করা হলেও সততার জন্য এই পুরস্কার প্রদান না করে যেসব কর্মকর্তা বিভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে কাজ করতেন, তাদের এই পুরস্কারে ভূষিত করা হতো। শ্রেষ্ঠ, দক্ষ ও চৌকস অফিসার পরিচয় তাদেরই মেলে, যারা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকত। নথির বিষয় যা-ই হোক, ন্যায্য কিংবা অন্যায্য, নথির পেছনের ব্যক্তি ও শক্তির পর্যালোচনা করে নথি পাস হতো। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় চলে যায় বছরের পর বছর। জনগণ দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কর্মকর্তার সারিতে ঘুরপাক খেতে থাকেন। তারা প্রত্যাশিত সেবা পান না। সেবা তাদের কাছে অধরাই রয়ে যায়।
শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত মো. আব্দুর রাজ্জাক দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের কারণে সরকারি সেবার মান উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্ন হচ্ছে। সরকারের সেবার ফি আদায় ও পরিশোধে জটিলতাও সীমাহীন। অনলাইন ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করে সহজে জটিলতা নিরসন করা গেলেও সেগুলো করা হয়নি। এ কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া অতিশয় কেন্দ্রীকরণ, নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতে দুর্বলতা, দৃষ্টিভঙ্গিগত অন্তরায় সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, দক্ষতা, কার্যকারিতা, গতিশীলতা, নৈতিকতাসহ সুশাসন নিশ্চিতে জনপ্রশাসনে মেধাবী ও যোগ্যতাসম্পন্ন তরুণদের ক্যাডার সৎভাবে কাজের সুযোগ করে দিতে হবে। কর্মকর্তাদের নেতৃত্বের গুণাবলি চর্চায় মনোযোগ দিতে হবে এবং কর্মকর্তাদের আচরণে আমূল পরিবর্তন করতে হবে।
জানা গেছে, জনপ্রশাসন সংস্কারে স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত কমপক্ষে এক ডজন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশনের সুপারিশ প্রতিবেদনের বাস্তবায়ন করা হয়েছে সামান্যই। বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সংস্কারে অনাগ্রহী ছিল রাজনৈতিক সরকারগুলো। তাই এত কমিশন করার পরও প্রশাসন ঘুরপাক খাচ্ছে সেই তিমিরেই। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবারো গঠিত হয় সংস্কার কমিশন। চার মাসের মধ্যে সুপারিশ প্রতিবেদনও দাখিল করে কমিশন। তবে এবার অনেকেই আশাবাদী জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে। তারা বলছেন, সংস্কার বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ নেই। অন্য সরকারগুলো যা পারেনি এ সরকার তা পারবে। তবে আগের অভিজ্ঞতায় কেউ কেউ এবারও আশার আলো দেখছেন না। তারা বলছেন, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। প্রশাসনে বড় পরিবর্তন আনতে হলে তাকে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ওপর নির্ভর করতে হবে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন সংস্কারে সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রেস্টোরেশন কমিটি (সিএআর), মার্শাল ল কমিটি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্গঠন কমিটি (সিএআরআর), অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস রি-অর্গানাইজেশন কমিশন (এএসআরসি), পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশন (পিঅ্যান্ডএসসি), সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম কমিশন (সিএআরসি), অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রি-অর্গানাইজেশন কমিটি (এআরসি), রেগুলেটরি রিফর্ম কমিশনসহ (আরআরসি) বিভিন্ন কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু এত বছরেও জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। দলীয়করণ চরম অবস্থায় নিয়ে গেছে প্রশাসনকে। একই সঙ্গে প্রশাসনে কর্মকর্তা বা বিভিন্ন ক্যাডারদের মধ্যে দ্বন্দ্বও ক্রমেই বেড়েছে।
প্রশাসনে মানুষের প্রত্যাশা এখনো অনেক দূরে, সেটা নতুন এ সংস্কার কমিশনের জরিপেও উঠে এসেছে। জরিপ অনুযায়ী দেশের ৮৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন জনপ্রশাসনে সংস্কার প্রয়োজন। ৮০ শতাংশ মানুষ মনে করেন জনপ্রশাসন ব্যবস্থা জনবান্ধব নয়। ৬৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, সরকারি কর্মচারীরা নাগরিকদের সঙ্গে শাসকের মতো আচরণ করেন।
মুয়ীদ কমিশন গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিল করে। কমিশন মন্ত্রণালয়/বিভাগের সংখ্যা কমানো ও মন্ত্রণালয়গুলোকে সমপ্রকৃতির পাঁচটি গুচ্ছে বিভক্ত, নতুন দুটি বিভাগ গঠন, দেশকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করা, দিল্লির আদলে ক্যাপিটাল সিটি সরকার গঠন, ডিএসসি ইউএনওদের পদবি পরিবর্তন, সিভিল সার্ভিস পুনর্গঠন, কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর এবং ওএসডি প্রথা বাতিল, মন্ত্রিসভা কমিটির মাধ্যমে সচিব নিয়োগ, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটা পুনর্ববিন্যাস, ন্যায়পাল নিয়োগসহ ১৪টি বিভিন্ন শিরোনামে দুই শতাধিক সুপারিশ পেশ করেছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. হাফিজুর রহমান ভুঞা বলেন, আমরা প্রশাসনে গত ৫০ বছরের ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি করেছি। নিজেদের স্বার্থ বা বড়ত্ব প্রকাশ করা নয়, সমস্যাগুলো সমাধানের বিষয়টি মাথায় রেখে এবারের সুপারিশ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটা রাজনৈতিক অঙ্গীকারের একটি বিষয়। রাজনীতিবিদরা যদি মনে করেন আমরা জনগণের স্বার্থে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তখনই এটির বাস্তবায়ন হতে পারে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৭ ডিসেম্বর তৎকালীন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান এম এম জামানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্েযর সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রেস্টোরেশন কমিটি (সিএআর) গঠন করা হয়। এর মূল লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রশাসনের পুনর্বহাল এবং কার্যক্রমে গতিশীলতা আনা। কিন্তু বাস্তবে এ কমিশনের কোনো সুপারিশই বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালুর ফলে বাংলাদেশের প্রশাসনের চিরায়িত চরিত্র পুরোপুরি পাল্টে যায়। ওই বছরের ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এক ভিন্নতর প্রেক্ষাপটে ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এম এ রশিদের নেতৃত্বে প্রধানত প্রশাসন ও বেতন কাঠামো যৌক্তিক ভিত্তির ওপর স্থাপন করার জন্য পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশন (পিঅ্যান্ডএসসি) গঠন করা হয়। এরপর ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনামলে গঠিত হয় সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম কমিশন (সিএআরসি)। এ কমিশনের মূল লক্ষ্য ছিল প্রশাসনের কাজগুলোর প্রক্রিয়াগত জটিলতা দূর করে দক্ষতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা। ১৯৯৩ সালে প্রশাসনিক কাঠামোর পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে গঠিত হয় অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রি-অর্গানাইজেশন কমিটি (এআরসি)। সাবেক সচিব এম নুরুন্নবী চৌধুরীর নেতৃত্বে ওই কমিটি ১৯৯৬ সালে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। তবে সরকারের পরিবর্তনের কারণে এ প্রতিবেদন বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ আর নেওয়া হয়নি। ১৯৯৭ সালে গঠিত পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম কমিশন (পিএআরসি) ২০০০ সালে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। এ কমিশনের প্রধান ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব এটিএম শামসুল হক। প্রতিবেদনে লোকপ্রশাসনের স্বচ্ছতা, দক্ষতা, জবাবদিহিতা ও কার্যকারিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. আকবর আলী খানের নেতৃত্বে গঠিত রেগুলেটরি রিফর্ম কমিশন (আরআরসি) ছিল প্রশাসনিক কাঠামোকে গতিশীল ও কার্যকর করার এক সাহসী উদ্যোগ। তত্ত্বাবধায়ক শাসনের কর্তৃত্ববাদী চরিত্র কিছু সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নে সহায়ক হলেও ২০০৯ সালে নতুন সরকার আসার পর কমিশন কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদিক হাসান বলেন, কমিশনগুলোর প্রতিবেদন বাস্তবায়ন না মূল কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া কোনো পর্যায়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমলারা বাধা সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ আমলাদের একটি অংশ মনে করে, সংস্কার হলে তাদের ক্ষমতা কমে যাবে। নতুন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে কতটা আশাবাদী- এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক সাদিক হাসান বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কিছু স্বল্পমেয়াদি সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন করতে পারবে। তবে যেগুলো দীর্ঘ মেয়াদী ইমপ্যাক্ট ফেলবে সেগুলোর করার ক্ষমতা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। এটা করতে পারে রাজনৈতিক সরকারকে।
সংস্কারপ্রত্যাশী সাধারণ মানুষ আশঙ্কা করছেন যে রাজনীতিবিদদের মতবিরোধের কারণে যদি সংস্কারপ্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়, তবে দেশ আবার দুর্নীতি ও অপশাসনের বেড়াজালে আটকে পড়বে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে প্রশাসন ক্যাডার এবং অন্যান্য ক্যাডারের মধ্যে সমন্বয়সাধন এবং ওই সুপারিশগুলো নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করা জরুরি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত এমন ব্যবস্থা চালু করা, যার মাধ্যমে সরকারি সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায়। এছাড়া দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য একটি প্রমাণনির্ভর পদ্ধতি গড়ে তোলা উচিত, যার মাধ্যমে পদোন্নতির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দা লাসনা কবীর সংগ্রামকে বলেন, গণঅভ্যুত্থান শুধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিল না, বরং সরকারের অদক্ষতা, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধেও এটি একটি সোচ্চার প্রতিক্রিয়া। এই বাস্তবতায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত প্রশাসনের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলোর কার্যকর সমাধান বের করা। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো প্রশাসনে জবাবদিহি বৃদ্ধি। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রশাসনে কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের যে পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে, তা অনেকটাই উপনিবেশ আমলের মার্জিত রূপ। এই পদ্ধতিতে কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতার চেয়ে তাদের ঊর্ধ্বতনদের সন্তুষ্টি অর্জন বেশি গুরুত্ব পায়।