ঈদকে সামনে রেখে যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষায় এমআরটি পুলিশ সদস্যরা এখন থেকে মেট্রোরেলের ভেতরে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছে পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। প্রতিটি ট্রেনে পুলিশ সদস্য থাকবেন দুইজন, তারা পুরো ট্রেন টহল দেবেন। তবে কতদিন এমআরটি পুলিশ নিয়োজিত থাকবে সে বিষয়ে ডিএমটিসিএল কিছু জানায়নি।

ডিএমটিসিএলের নির্দেশনায় ট্রেনে পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এমআরটি পুলিশের ডিআইজি সিদ্দিকী তানজিলুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার তিনি বলেন, “ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় হয় তা নিয়ন্ত্রণ করা, যত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক কমানো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে এমআরটি পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। ডিএমটিসিএলের নতুন এমডি স্যারের নির্দেশে এটা করা হয়েছে।”

এই পুলিশ সদস্যের কাজ নিয়ে তানজিলুর রহমান বলেন, “প্রতি ট্রেনে দুজন করে পুলিশ সদস্য থাকবেন। তারা পুরো ট্রেনে টহল দিবেন। তারা দেখবেন কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে কী না। যখন যার ডিউটি থাকবে তারা ট্রেনে দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশের সঙ্গে একজন করে আনসার সদস্যও থাকতে পারেন।” ডিএমটিসিএলের একজন উপ মহাব্যবস্থাপক বলেন, “এখন রোজার মাস চলছে, সামনে ঈদ। এ সময় যাত্রীরা যেন নিরাপদে চলতে পারেন তাদের নিরাপত্তা বাড়ানো, পাশাপাশি তারা যেন নিরাপদবোধ করেন এজন্য ট্রেনে পুলিশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। কতদিন পর্যন্ত তা বহাল থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।”

দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলের কোচের ভেতর এমআরটি পুলিশ সদস্যদের প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তারা কোচের ভেতর টহলে থাকবেন।

অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, ৬টি কোচের একটি ট্রেনে মোট দুজন এমআরটি পুলিশ সদস্য থাকবেন। সেই হিসেবে চলমান ১০টি ট্রেনে ২০ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। সকাল থেকে দুপুর ও দুপুর থেকে রাত; এই দুই শিফটে তারা কাজ করবেন। এ ছাড়া স্টেশনগুলোতে যেসব এমআরটি পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন, তারাও থাকবেন।

যাত্রীদের সঙ্গে থাকা বাচ্চা, বৃদ্ধ এবং মালামাল হারানো গেলে তাৎক্ষণিক খুঁজে বের করা, চুরি-ছিনতাই প্রতিরোধ করা, যাত্রীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা নিয়ন্ত্রণসহ নাগরিক চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো ধরনের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে এমআরটি পুলিশ।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন। ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। ২০২৪ সালের শুরুতেই উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনের সবগুলোই খুলে দেওয়া হয়। এর সার্বিক নিরাপত্তায় চলতি বছরের ২০২৩ সালের ২৪ মে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি পুলিশ গঠনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয় সরকার। মেট্রোরেল স্টেশন ও স্থাপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন শুরু করে ২০২৩ সালের ৯ অক্টোবর থেকে।

পুলিশের একজন উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) নেতৃত্বে এমআরটি পুলিশ গঠন করা হয়। বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।