DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

রাজধানী

রহমত মাগফিরাত নাজাতের মাস রমযান

সময় মতো খাওয়া দাওয়া করা এবং সময় মতো নামায আদায় করাসহ সময়ের গুরুত্ব তুলে ধরেছে পবিত্র মাহে রমযান।

Printed Edition
afaf

মিয়া হোসেন : সময় মতো খাওয়া দাওয়া করা এবং সময় মতো নামায আদায় করাসহ সময়ের গুরুত্ব তুলে ধরেছে পবিত্র মাহে রমযান। পবিত্র রমযান মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলমানদের জন্য জান্নাত নিশ্চিত করতে বেশ কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এ মাসে এসব কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে জীবনকে একটি নিয়মানুবর্তীতার মধ্যে আনা সম্ভব। আজ পবিত্র রমযানের এগারতম দিন। রহমতের দশক শেষ হয়ে মাগফেরাতের দশক শুরু হয়েছে। সারাদিন রোজা রেখে ইফতার করার পর ক্লান্তি আসে। এ ক্লান্তি দূর করার জন্য তারাবীহের নামাযের ব্যবস্থা করেছেন। সারা বিশ্বে এশার নামাযের সময় তারাবীহর নামায আদায় করা হয়ে থাকে। এ নামাযের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদীস শরীফে অনেক বর্ণনা এসেছে।

সিহাহ সিত্তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, হযরত নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযান মাসের রাত্রিতে ঈমান ও সতর্কতা, হিসাব-নিকাশের চেতনা সহকারে নামায আদায় করবে, তার পূর্বের যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। হাদীসে উল্লেখিত ‘কিয়ামে রমযান’ দ্বারা তারাবীর নামায উদ্দেশ্য করা হয়েছে বলে অধিকাংশ মুহাদ্দিসীনদের মতামত। তারাবীহ অর্থ আরাম করা, বিশ্রাম করা। বিশেষ নামাযের নাম ‘তারাবীহ’ রাখা হয়েছে এ জন্য যে, এতে প্রতি চার রাকাত নামায অন্তর কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম গ্রহণ করা হয়। ফলে প্রতি চার রাকাত নামাযেরই নামকরণ করা হয়েছে ‘তারাবীহ'। তারাবীহ'র নামাযের নিয়ম সাহাবীদের কাজ দ্বারা জানা গেছে। তাই ঠিক যে সময়ে তারা উহা পড়েছেন, এর জন্য ইহাই সঠিক সময়। আর তারা উহা পড়েছেন এশার ফরয নামাযের পর বিতরের নামাযের পূর্বে। নবী করীম (সা.) এ নামায পড়েছেন। কিন্তু তিনি রীতিমতো প্রত্যেক রাতে পড়েন নাই। এর কারণ স্বরূপ তিনি নিজেই বলেছেন, “রাতের এই তারাবীহর নামায তোমাদের প্রতি ফরয হয়ে যাওয়ার ভয় করছি আমি।” তাঁর এই ভয়ের কারণ ছিল যে, “যেসব অ-ফরয কাজ নবী করীম (সা.) আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে ও কাছাকাছি সময়ে স্থায়ীভাবে করেন, তাহাই তার উম্মতের উপর ফরয করা হয়।” মহানবী (সা.)-এর যুগে ইহা মুসলমানগণ নিজস্বভাবে ও নিজ নিজ ঘরে বসে আদায় করতেন। মুহাদ্দিসগণের সম্মিলিত মতে ইহা মুস্তাহাব অর্থাৎ ইহা ফরয বা ওয়াজিব নহে। ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আহমদ এবং মালিকী মাযহাবের কিছু ফিকাহবিদদের মতে, এ নামায জামায়াতের সাথে পড়া উত্তম। হযরত ওমর ফারুক (রা.) ও সাহাবাগণ (রা.) এ নামায জামায়াতের সাথে পড়েছেন এবং তারপর থেকে মুসলমান জাতি এ নামায এই নিয়মে পড়ে আসছে। ফলে এটা ঈদের নামাযের ন্যায় মুসলমানদের জাতীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। কতক আলেমের মতে ইহা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। কেননা খুলাফায়ে রাশেদীন ইহা সর্বদা পড়তেন।

তারাবীহ নামাযের রাকাত সংখ্যা বিভিন্ন হাদীসে বিভিন্ন রকম উদ্ধৃত হয়েছে। সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বিভিন্ন রকম বর্ণনা পাওয়া যায়। সায়েব ইবনে ইয়াযীদ হতে বায়হাকী বর্ণনা করেছেন, “আমরা (সাহাবাগণ) হযরত ওমরের (রা.) বিতরের নামাযসহ বিশ রাকাত নামায পড়তাম।” তাবারানী হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণনা করেছেন, “নবী করীম (সা.) রমযান মাসে বিতর ছাড়া বিশ রাকাত নামায পড়তেন। কিন্তু এ হাদীসদ্বয়ের সনদ দুর্বল। তবে হযরত মা আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত হাদীসে আট রাকাতের বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি বলেন, “নবী করীম (সা.) রমযান মাসে ও অন্যান্য সময়ের ফরয ছাড়া মোট এগার রাকাতের অধিক নামায (রাতের বেলা) পড়তেন না।” মুসনাদে আহমদে উদ্ধৃত হয়েছে হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, “রাসূলে করীম রাত্রি বেলা আট রাকাত নামায পড়তেন, অতঃপর বিতর পড়তেন। এরপর বসে বসে দুই রাকাত নামায পড়তেন।” ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেছেন, তারাবীহ নামাযের নির্দিষ্ট রাকাত সংখ্যা নবী (সা.) হতে প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করাই মূলগতভাবে ভুল। কেননা তিনি রাকায়াতের সংখ্যা বিশ বা আট নির্দিষ্ট করে যান নাই। বরং তাঁর ও সাহাবীদের থেকে বিভিন্ন সংখ্যা বর্ণিত হয়েছে।

সংশোধনী

গতকাল মঙ্গলবার দশম রোজা ছিল। কিন্তু ভুলবশত নবম রোজা লেখা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এ ভুলের জন্য দু:খিত।