রাজধানী
বনানীতে দুর্ঘটনায় পোশাক শ্রমিক নিহত সড়ক অবরোধে তীব্র যানজট
রাজধানীর বনানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার ভোর ৬টার দিকে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি ইউটার্ন ইনকামিংয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত পোশাক শ্রমিকের নাম মিনারা আক্তার।
Printed Edition
রাজধানীর বনানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার ভোর ৬টার দিকে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি ইউটার্ন ইনকামিংয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত পোশাক শ্রমিকের নাম মিনারা আক্তার। আহত আরেক পোশাক শ্রমিকের নাম সুমাইয়া আক্তার। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। তারা বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ থেকে মহাখালীর আমতলী পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেন। এতে দুই পাশের সড়কে শত শত গাড়ি আটকে পড়ে। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে বিভিন্ন সড়কে ছড়িয়ে পড়ে যানজট। প্রায় ৭ ঘণ্টা পর শ্রমিকেরা সড়ক ছাড়েন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। শ্রমিকেরা সরে যাওয়ার পর যান চলাচল শুরু হয়।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সরোয়ার বলেন, পিকআপটি ইতিমধ্যে পুলিশ জব্দ করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তেজগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে গাড়িটিকে জব্দ করা হয়। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। তাকে আটক করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনার পর ওই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সাময়িক স্থগিত করেছে পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।
সড়ক অবরোধ চলাকালে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় যানবাহন আটকে আছে। এ কারণে যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে বিপাকে পড়েন। যানজটে আটকা পড়ে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন। তাদের অনেকে উপায় না দেখে হেঁটেই যাত্রা শুরু করেন। পায়ে হেঁটে যাওয়া একজন ফররুখ আহমেদ। তিনি গ্রিন রোড এলাকায় অবস্থিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ফররুখ বলেন, তিনি বিমানবন্দর থেকে দু-আড়াই ঘণ্টা হেঁটে মহাখালী পর্যন্ত এসেছেন। কুমিল্লার বাসিন্দা কামরুল হাসান সৌদি আরব যাবেন। তার ফ্লাইট বেলা ২টা ২৫ মিনিটে। যানবাহন না পেয়ে তিনি হেঁটে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। কামরুল হাসান বলেন, কুমিল্লা থেকে গাড়িতে তেজগাঁও পর্যন্ত এসেছেন। রাস্তা বন্ধ শুনে হেঁটে রওনা দেন তিনি। এনা পরিবহনের বাসচালক হাফিজুর রহমান বলেন, সিলেট থেকে সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে বনানীতে পৌঁছান তিনি। এরপর বাসটি আটকে দেন শ্রমিকেরা। তখন থেকে একই জায়গায় আটকে ছিলেন তিনি। এ কারণে বাস থেকে সব যাত্রী নেমে গেছেন। স্কুলবাসের চালক শহিদুল ইসলাম দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বলেন, গুলশান থেকে তিনি উত্তরা যাচ্ছিলেন। সকাল ৭টা ২২ মিনিটের দিকে গাড়িসহ আটকে পড়েন তিনি।
বেসরকারি চাকরিজীবী গোলাম ওয়াদুদ বলেন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে বাসে কারওয়ান বাজারে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন তিনি। সকাল পৌনে আটটার দিকে বনানীতে যানজটে আটকা পড়েন বাস না চলায় নেমে একঘণ্টার বেশি সময় হেঁটে তিনি কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সরকার বলেন, রাস্তা পারাপারের সময় দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর থেকেই শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. তারেক মাহমুদ বলেন, শ্রমিকেরা তিনটি দাবি জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে আছে পিকআপ ও চালককে আটক, ক্ষতিপূরণ প্রদান ও নিরাপদে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করা। পিকআপটি ইতিমধ্যে জব্দ হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে। আর ক্ষতিপূরণ ও নিরাপদে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা আলোচনা করবেন। দাবি পূরণের আশ্বাসে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে দেন। এরপর যান চলাচল শুরু হয়।