বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনাকে সমর্থন করবে বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বেলা ১১টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক বসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, এটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় সভা। আমরা আলোচনায় এসেছি এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বর্তমানে যে কাজ করছে তা সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে জানতে পেরেছি, যেহেতু বাংলাদেশ তার রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, আমি আজ নির্বাচন কমিশনকে তিনটি মূল বার্তা পেশ করেছি। প্রথমত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই দেশের জন্য একটি দৃঢ় অংশীদার এবং আমরা এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময়ে আপনার পাশে আছি।
দ্বিতীয়ত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে তার অংশীদারিত্বকে সব দিকে শক্তিশালী করতে চায় এবং আমরা এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচ্চাকাক্সক্ষাকে সমর্থন করতে এসেছি, যাতে তারা গত বছর আপনার নিজস্ব নাগরিকদের দ্বারা প্রকাশিত প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে।
তৃতীয় বার্তাটি হলো: প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এ দেশে নির্বাচন পরিচালনাকে সমর্থন করবে। আমরা এটি একটি উল্লেখযোগ্য আর্থিক প্যাকেজের পাশাপাশি আমাদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে করব।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের সাহায্য করতে চায়। তারা জানতে চেয়েছিল ভোটের বাজেট কত, আমাদের টাকা পয়সা ঠিকমতো রয়েছে কি না বা কোনোরকম অসুবিধা আছে কি না।
সিইসি বলেন, ওনারা জানতে চেয়েছেন আগামী নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি কী আছে। আমরা যা যা করছি তাদের জানিয়েছি। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতির সবকিছু জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি, আমাদের টাকা-পয়সার কোনো অসুবিধা নেই। সরকারের কাছে বাজেট চেয়েছি। তবে ওনারা (মিলারের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল) আমাদের সাহায্য করতে চান। আমাদের কী প্রয়োজন সেটা জানতে চান। আমরা বলেছি, ইউএনডিপি ইতোমধ্যে একটা নিড অ্যাসেসমেন্ট করেছে। একটা টিম পাঠিয়েছিল তারা। তারা সব সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করতে চান তারা। আগামী মাসে একটা কর্মশালা করবেন তারা। সেখানে সিভিল সোসাইটি থাকবে। পোলিং এজেন্ট, ভোটার এডুকেশন ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে চেয়েছেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক মানের একটা নির্বাচন ওনারা দেখতে চান। আমরা তো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখানে আমাদের দ্বিমত নেই। তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চান, যেটা আমাদেরও ওয়াদা। এটা আমরাও চাই। নিরপেক্ষভাবে আমরা কাজ করব, এটা তো আমরা ঘোষণা দিয়েছি। আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছি। এমন কোনো দিন আছে যে আমাদের কেউ কথা বলছে না আপনাদের সঙ্গে। এটা আসলে কী বোঝায়, আমরা লুকিয়ে ছাপিয়ে কিছু করছি না। আমরা যা করছি একান্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে। আশা করছি সবার সহযোগিতা নিয়ে করতে পারবো।
সিইসি বলেন, অতীতে যা হয়েছে ভুলে যান। এটা বর্তমান। দয়া করে কনফাইন টু দ্য কারেন্ট সিচুয়েশন। অতীতের কথা ভুলে যান, সবাই যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে পরিবেশ আমরা তৈরি করে দেব ইনশাআল্লাহ।