DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

রাজধানী

স্বাধীনতার মাস

আজ শুক্রবার ৭ই মার্চ। এই দিনটি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে ১৯৭১ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে শেষ মুজিবের ভাষণের কারণে। এই ভাষণ দিয়ে শেখ মুজিব উপস্থিত জনতাকে স্বাধীনতার পক্ষে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।

স্টাফ রিপোর্টার
Printed Edition
0222222

আজ শুক্রবার ৭ই মার্চ। এই দিনটি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে ১৯৭১ সালের এই দিনে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে শেষ মুজিবের ভাষণের কারণে। এই ভাষণ দিয়ে শেখ মুজিব উপস্থিত জনতাকে স্বাধীনতার পক্ষে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তার এই ভাষণ ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। ৭ই মার্চের ভাষণের কারণে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিলেও স্বাধীনতার পর শাসন ক্ষমতায় বসে শেখ মুজিবের বিতর্কিত ভূমিকা ইতিহাসে কুখ্যাতি এনে দেয়। এর শেষ পরিণতি আসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। এমন সময় আবার জাতির জীবনে ৭ মার্চ এলো; যখন দিনটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করার সুযোগ নেই। কারো কাছে চাঁদাবাজির অপশন নেই। শহরের প্রতিটি অলি-গলিতে উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে বাসিন্দাদের জীবন অতীষ্ঠ করার জো নেই।

কঠিন বাস্তবতা হলো ৭ ই মার্চকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজরা আজ কেউ জেলে, আর বাকীরা পালিয়ে। অপকর্মের হোতারা অবৈধ সম্পদ রক্ষা আর জেল থেকে বাঁচার তাগিদে আত্মগোপন করে আছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। অবশ্য কেউ কেউ ঘাপটি মেরে থেকেও স্বৈরাচার হাসিনার পারপাস সার্ভ করার চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

এদিকে শেখ মুজিবের উত্তরসূরি হাসিনাও ক্ষমতায় এসে শেখ মুজিবের পথ অনুসরণ করে। দীর্ঘ ১৫টি বছর স্বেচ্ছাচারিতা এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শেখ মুজিবকে বলপূর্বক দেশের মানুষের দেবতার আসনে বসানোর চেষ্টা করে। পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে সরকারি বেসরকারি অফিসের প্যাডের কোনায় শেখ মুজিবের ছবি ব্যবহারে বাধ্য করে। অধিকাংশ মুসলমানের দেশে যেখানে সেখানে মুর্তি বানিয়ে কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করতে থাকে। এহেন বাড়াবাড়িতে ধর্মপ্রাণ মানুষ ক্ষোভে ফোঁসতে থাকে। আর সুদিনের অপেক্ষা করতে থাকে। অবশেষে আসে দ্বিতীয় স্বাধীনতা। হাজার হাজার প্রাণের বিনিময়ে আসা স্বাধীনতার দিনে জনগণ তাদের ক্ষমতার প্রয়োগ করে। ক্ষোভে ঘৃণায় শেখ মুজিবের যত মূর্তি আছে তা ভেঙে ফেলে। হাসিনা তার বাবার জয়গান ও স্তুতি করার জন্য রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা বিনষ্ট করেছে। দালালদের মাধ্যমে তার স্তুতি বাক্য তৈরি করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জোরপুর্বক অর্থ আদায় করেছে। করা হয়েছে ব্যাপক চাঁদাবাজি। হাসিনার দলের নেতাকর্মীরা এই দিবসগুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা উপার্জনের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।

৩৬ জুলাই ছাত্র-জনতার বিপ্লব ও অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া মুজিববাদী স্বৈরাচারি মতবাদকে উৎখাত করে বাংলার তরুণেরা। শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর এই প্রথম দেশে ৭ মার্চ এলো। জানা গেছে স্বৈরাচার হাসিনা তার বাবার নামের অপব্যবহার করে রাষ্ট্রে হাজার হাজার কোটি টাকা অপচয় করেছে। এগুলোর হিসেব করে তার বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে এবছর ৭ মার্চকে কেন্দ্র করে নেই কোন চাঁদাবাজির মহোৎসব, নেই কোন বাড়াবাড়ি। না আছে স্বৈরাচারের আস্ফালন। ফলে দিনটি অনেকটা নিরবেই কেটে যাবে কোন কর্মসূচি ছাড়াই।

এই দিনে সবার মধ্যে একটাই প্রত্যাশা পালিয়ে যাওয়ার স্বৈরাচার হাসিনা এবং তার দোসরদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণের ওপর জুলূম এবং অত্যাচার, খুন গুম হত্যাকান্ডের বিচার কত দ্রুত হবে সেই দিন গণনা। এই দেশের মানুষ চায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতিটি অপকর্মের বিচার এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মানুষকে এই আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। হয়তো সেদিন আসবে। অচিরেই।