হাইপারটেনশন বা উচ্চরক্তচাপ মহামারির দিকে যাচ্ছে। বছরে বিশ্বজুড়ে এক কোটির বেশি মানুষের জীবনহানি ঘটে উচ্চরক্ত চাপের কারণে। এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জাতীয় জীবনে। উচ্চ রক্তচাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে জীবনাচরণ পরিবর্তনের কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বিএমএ ভবনের একটি অডিটরিয়ামে সাংবাদিকদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করে প্রজ্ঞা। কর্মশালায় উচ্চ রক্তচাপের ক্ষতিকর প্রভাব গণমাধ্যমে তুলে ধরতে নতুন আইডিয়া দেওয়া হয়। পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী আক্রান্তদের অর্ধেক মানুষ জানে না যে তার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যেও চিকিৎসা নেওয়া নিয়ে অনীহা রয়েছে। আক্রান্তদের ৩৮ শতাংশ নিয়মিত ওষুধ সেবন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধির পেছনে ব্যক্তি, পরিবার এবং রাষ্ট্রের দায় রয়েছে। এজন্য স্বাস্থ্যখাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে অপরিকল্পিত বিনিয়োগ হয় স্বাস্থ্য খাতে। তিনটি বিভাগকে এক ছাতার নিচে এনে টার্গেট ভিত্তিক সেবা প্রদানের সিস্টেম চালু করলে এর সুফল পাওয়া যাবে। গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসির ইনকিউবেটর মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, প্রথমে উচ্চ রক্তচাপ যেন না হয় সেকাজটি করতে হবে। আর হয়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. তন্ময় সরকার বলেন, করোনা মহামারিতে মাত্র ৭০ থেকে ৭১ লাখ মানুষ মারা গেছে। আর উচ্চ রক্তচাপের কারণে বছরে ১ কোটি মানুষের জীবনহানি ঘটছে। অথচ আমাদের মধ্যে সচেতনতা নেই। তিনি জীবনাচারে পরিবর্তন আনার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, খাবারে লবণ কম খেতে হবে। বায়ু দুূষন রোধ করতে হবে। অ্যালকোহলমুক্ত জীবন যাপন করতে হবে। রমজানে ভাজাপুরা খাবার পরিহার করতে হবে।
কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জোবায়ের, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের ডিরেক্টর জেনারেল ড, এনামুল হক , বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক মো. মারুফ হক খান প্রমুখ। ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও পরিসংখ্যান তুলে ধরেন সমন্বয়ক সাদিয়া গালিবা প্রভা।