ঐতিহ্যবাহী রংপুর প্রেসক্লাব প্রশাসকের অবৈধভাবে সদস্য অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত ২৪ জুলাই রংপুর সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক ফারহানা খান এ আদেশ দেন। আদেশে আদালতের পর্যালোচনায় উল্লেখ করা হয়, রংপুর প্রেসক্লাবে প্রশাসক নিয়োগ বিষয়ে প্রেসক্লাব বর্তমান কমিটির উচ্চ আদালতে দাখিল করা রীট পিটিশন শুনানির জন্য অপেক্ষামান রয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসক নালিশী সংস্থায় সদস্য অন্তর্ভুক্তকরণ কার্যক্রম করলে তা পরবর্তীতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করবে এবং বাদীপক্ষের অপূরণীয় ক্ষতির আশংঙ্কা রয়েছে। সেই সাথে প্রশাসক অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদনের প্রেক্ষিতে কোন প্রকার আপত্তি দাখিল না করা, প্রেসক্লাবের স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণাদি থাকা এবং অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন মঞ্জুর হলে বিবাদীর ক্ষতির সম্ভাবনা কম মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় আদালত প্রশাসককে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রংপুর প্রেসক্লাবে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর প্রেসক্লাব বিধিবদ্ধ বেসরকারী সংস্থা। এর নিজস্ব গঠনতন্ত্র রয়েছে এবং প্রেসক্লাব সেই গঠনতন্ত্র দ্বারা পরিচালত। প্রেসক্লাব প্রতি দুই বছর পরপর সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন হয়ে আসছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচিত কমিটি দায়িত্বপালন করা অবস্থায় অপসাংবাদিক ও দূর্নীতিগ্রস্থ বহিরাগত ব্যক্তিবর্গ স্বনামধন্য ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন রংপুর প্রেসক্লাবে অবৈধভাবে প্রাথমিক যোগ্যতা না থাকা স্বত্বেও সদস্য হওয়ার জন্য পায়তারা করতে থাকেন। সে কারণে পরিকল্পিতভাবে রংপুর প্রেসক্লাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সমাজসেবা কার্যালয় অবৈধভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রকৃতপক্ষে রংপুর প্রেসক্লাব একটি পেশাজীবি সংগঠন। যার নিজস্ব গঠনতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত। যা কোনভাবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতাধীন সংগঠন হতে পারে না। সেই সাথে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠালগ্নে সমাজসেবা কর্তৃপক্ষ রংপুর নিজেরাই উপযাচক হয়ে প্রায় ৩৩ বছর পূর্বে সংগঠনটিকে নামে মাত্র রেজিস্ট্রেশন দেয়। যা তাদের এখতিয়ার বর্হিভূত ছিল। কেন না বাংলাদেশের কোন প্রেসক্লাব বা পেশাজীবি সংগঠনকে সমাজসেবা অধিদপ্তর রেজিস্ট্রেশন দিতে পারে না। সমাজসেবা অধিদপ্তর রেজিস্ট্রেশন, নবায়নের জন্য ৩৩ বছরেও কোন পত্র বা নোটিশ প্রেস ক্লাবকে দেয়নি। সমাজসেবা অধিদপ্তর ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহিস্কৃত, বিতর্কিত অপসাংবাদিকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন এবং ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি অবৈধভাবে তত্বাবধায়ক মন্ডলী গঠন করে। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজসেবা ১৯ জানুয়ারি তত্বাবধায়ক মন্ডলীর কাছে প্রেসক্লাবের দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচিত কমিটিকে জোর করে সরিয়ে দিয়ে প্রেসক্লাবে অবৈধ প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। এ নিয়ে অবৈধ প্রশাসকের বিষয়ে প্রেসক্লাব কমিটি হাইকোর্টে রীট পিটিশন দাখিল করে। অপরদিকে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার অসৎ উদ্দেশ্যে কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতায় প্রশাসক তার উপর অর্পিত তর্কিত দায়িত্বেরও অতিরিক্ত এবং অতিউৎসাহী হয়ে প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে গত ১৩ মে প্রেসক্লাবে সাধারণ সদস্য অন্তর্ভুক্তির নোটিশ জারি করে।