২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে রোববার (৩ আগস্ট) থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ ও সূচনা বক্তব্য শুরু হতে যাচ্ছে।
এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ অনুষ্ঠিত হবে। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ এই মামলার শুনানি পরিচালনা করবেন।
অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। বিচার কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।
এর আগে, গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেয় এবং মামলার অন্যতম আসামি ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘অ্যাপ্রুভার’ হিসেবে দাখিলকৃত আবেদন গ্রহণ করে।
মামলায় মোট পাঁচটি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। অভিযোগগুলোতে উল্লেখ রয়েছে, বিগত সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, গুলি বর্ষণ এবং নিরীহ জনতার ওপর হামলার ঘটনায় এসব ব্যক্তি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রথম অভিযোগে দাবি করা হয়, গত বছরের ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে সহিংস আক্রমণকে উৎসাহিত করা হয়েছিল, যার ফলে সহস্রাধিক প্রাণহানি ঘটে এবং বহু মানুষ আহত হন।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, সরকারদলীয় নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রাণঘাতী অস্ত্র, ড্রোন এবং হেলিকপ্টারের সহায়তায় আন্দোলনকারীদের দমন করা হয়। তৃতীয় থেকে পঞ্চম অভিযোগে বিভিন্ন স্থানে (রংপুর, চানখাঁরপুল, আশুলিয়া) সংঘটিত নিরস্ত্র ছাত্র ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলা, গুলি ও পুড়িয়ে মারার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।
এ মামলার সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দায়ের করা alleged মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত চারটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে আদালত অবমাননার এক মামলায় ছয় মাসের দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে আগামী ১২ ও ২৪ আগস্ট।