ঢাকা মহানগরীতে গত বছরের ১৮ জুলাই আন্দোলন দমাতে সরাসরি আন্দোলনকারীদের গুলী করতে ওয়্যারলেস বার্তায় নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।

গতকাল মঙ্গলবার এই ওয়্যারলেস বার্তা ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছে প্রসিকিউশন। এদিকে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ-জেরা শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজ বুধবার দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

ওয়্যারলেস বার্তায় হাবিবুর রহমান বলেন,"আমাদের সকল অফিসার যে যেখানে আছেন ডিউটি করছেন আমাদের নিজের জীবন সম্পদ রক্ষা, অফিস আদালত রক্ষা, জনগণের জীবন সম্পদ রক্ষা করার জন্য আপনার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন আমি বারবার...বলেছি, নির্দেশ দিয়েছি, আপনাদের স্বাধীনতা দিয়েছি যেখানে যেমন সিচুয়েশন সেভাবে... আপনারা করবেন আপনারা নীলিং পজিশনে গিয়ে হাঁটু গেঁড়ে, হাঁটু গেঁড়ে কোমরের নীচে আপনারা গুলী করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবেন ওভার।"

গতকাল মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেনÑ বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এদিন সকাল পৌনে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য-জেরা চলে। তবে মাঝে কিছুক্ষণ বিরতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুই নম্বর সাক্ষী হিসেবে চানখারপুলে ঘটনা নিয়ে জবানবন্দি দেন আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন। তিনি একজন কলেজশিক্ষিকা। এ ছাড়া ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে তৃতীয় সাক্ষীর জবানবন্দী দেন শেখ জামাল হাসান।

জবানবন্দিতে সাক্ষীরা চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া চানখারপুলসহ আশপাশের এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্মমতার বর্ণনা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার চান সাক্ষী আঞ্জুয়ারা। এ ছাড়া কান্নাকণ্ঠে ছেলের হত্যাকারী কনস্টেবল সুজনসহ অন্যদের ফাঁসি চেয়েছেন শহিদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের বাবা।

ট্রাইব্যুনালে গতকাল দ্বিতীয় সাক্ষ্যগ্রহণের সময় প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম। এ সময় ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর তারেক আবদুল্লাহ, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।

জবানবন্দীতে শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের (মোস্তাকিম) বাবা শেখ জামাল হাসান বলেছেন, হাসপাতালে লাশ নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়ে ডাক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে লাশ হাসপাতালে রাখা যাবে না।

শেখ জামাল হাসান আরও বলেন, আমার ১৪ বছর বয়সী একমাত্র পুত্রকে হারিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী পাগলের মতো জীবনযাপন করছি। আমার ছেলে কুরআনের ১০ পারা হেফজ করেছিল। ওর কি অপরাধ ছিল? আমি ছেলে হারানোর বেদনায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি। আমি আসামীদের বিচার চাই। আমি আসামীদের ফাঁসি চাই।

সাক্ষীতে শহীদ মুস্তাকিমের বাবা বলেন, ‘আমার নাম শেখ জামাল হাসান। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৫৪ বছর। আমি এখন অবসর জীবনযাপন করছি। আমি নির্মাণ প্রপার্টি ডেভেলপারে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতাম। আমি আমার পৈতৃক বাড়ি ঢাকার গেন্ডারিয়াতে বসবাস করি। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলের নাম শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ (মোস্তাকিম) (১৪)। মেয়ের নাম নাফিসা নাওয়াল (১৮)। আমার ছেলে গেন্ডারিয়া উইল পাওয়ার স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। আমার মেয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছে।’

শেখ জামাল হাসান আরও বলেন, ‘১ জুলাই ২০২৪ থেকে ৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত আমি, আমার ছেলে এবং আমার পরিবারের সদস্যরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। আমার স্ত্রী ও সন্তানেরা এই আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। আমার ছেলের চোখ দিয়ে ঢুকে গুলী মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়।

জবানবন্দিতে শহীদ মোস্তাকিমের বাবা বলেন, ‘৫ আগস্ট সকাল আনুমানিক ১০টা ৪৫ মিনিটে আমার ছেলে শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদ তার বন্ধু সিয়ামকে (১৪) নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। আমরা তখন বাসায় ছিলাম। আমার স্ত্রী ও মেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তারা মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে অংশগ্রহণ করে। বেলা আনুমানিক ১টা ৪৫ মিনিটের সময় আমার শ্যালক আসিফ আমার মোবাইলফোনে কল করে আমাকে বলে, আমার ছেলে মোস্তাকিম গুলীবিদ্ধ হয়েছে। আমি তাকে খুঁজতে বাসা থেকে বের হয়ে গেন্ডারিয়া ধূপখোলা মাঠে এবং আজগর আলী হাসপাতালে গিয়ে খুঁজতে থাকি।’

লাশের খোঁজ নেওয়ার বর্নণা দিয়ে শেখ জামাল হাসান বলেন, ‘বেলা আনুমানিক ২টার সময় আমার ভাতিজি সম্পা আমার মোবাইলফোনে কল করে আমাকে বাসায় যেতে বলে এবং মোস্তাকিমের লাশ বাসায় আনা হয়েছে বলে জানায়। আমি বাসায় গিয়ে দেখি, আমার ভাই আব্দুর রহমানের ফ্ল্যাটে আমার ছেলে মোস্তাকিমের নিথর দেহ পড়ে আছে। আমি লক্ষ করে দেখলাম, তার বাম চোখে গুলী লেগে মাথার পেছন দিকে বড় গর্ত হয়ে বের হয়ে যায়।’

শেখ জামাল হাসান আরও বলেন, ‘আমি ওখানে আমার ছেলের বন্ধু সিয়াম এবং রূপগঞ্জের আব্দুর রউফসহ আরও কয়েকজন ছাত্রকে দেখতে পাই। তখন সিয়াম আমাকে বলে, আমার ছেলে চানখারপুল নবাব কাটারা এলাকায় হানিফ ফ্লাইওভারের ঢালে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের পেছনের রাস্তার ওপর মিছিলরত অবস্থায় গুলীবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে। সে আরও জানায়, শেখ বুরহানউদ্দিন কলেজের দিক থেকে পুলিশ মিছিল লক্ষ্য করে গুলী ছুড়ে এবং সেখানে আমার ছেলে গুলীবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে। ছেলের বন্ধু আব্দুর রউফ আরও বলে, সে ও সিয়ামসহ আরও কয়েকজন ছাত্র মিলে রিকশাযোগে আমার ছেলেকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

লাশ নিতে ডাক্তারদের হুমকি

‘ছেলের বন্ধু আব্দুর রউফ আরও জানায়, হাসপাতালের ডাক্তারদের পীড়াপীড়িতে তারা দ্রুত আমার ছেলের লাশ বাসায় নিয়ে আসে। ডাক্তার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে লাশ হাসপাতালে রাখা যাবে না। তাড়াতাড়ি লাশ না নিয়ে গেলে তারা বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামকে দিয়ে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। এ সময় ডাক্তাররা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে’, যোগ করেন মোস্তাকিমের বাবা।

শেখ জামাল হাসান বলেন, ‘তারপর আসরের নামাযের শেষে আমার ছেলের লাশ জানাযার জন্য ধূপখোলা মাঠে নিয়ে যাই। সেখানে শেখ শাহারিয়ার খান আনাসের লাশও আনা হয়। সে-ও চানখারপুলে গুলীবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। জানাযা শেষে দুজনকেই গেন্ডারিয়া জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।’

শেখ জামাল হাসান আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা থানার এডিসি আক্তারুল ইসলাম, মো. ইমরুল, এরশাদের নির্দেশে ৪০-৫০ জন পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলীবর্ষণ করে। এর মধ্যে কনস্টেবল সুজন ও নাসিরুল টার্গেট করে আমার ছেলেকে এবং মিছিলে গুলী করে। পুলিশের গুলীতে শাহরিয়ার খান আনাস, ইয়াকুব, রাকিব, মানিকসহ আরও কয়েকজন গুলীবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আমি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিওর মাধ্যমে আসামীদের নাম জেনেছি। ভিডিওগুলো আমি আমার মোবাইলে সংরক্ষিত রেখেছি। সেখানে আমার ছেলের রক্তাক্ত অবস্থার ভিডিও আছে’, বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাক্ষী শেখ জামাল হাসান।

‘সুজন আমার ছেলেকে গুলী করেছে’

শহীদ মোস্তাকিমের বাবা বলেন, ‘আমি শুনেছি সুজন আমার ছেলেকে গুলী করেছে। আমি যখন আমার ছেলেকে দেখতে পাই তখনও তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল। আমার ছেলেকে গুলী করার ভিডিও আমার কাছে আছে। আমার ১৪ বছর বয়সী একমাত্র পুত্রকে হারিয়ে আমি আমার স্ত্রী পাগলের মতো জীবনযাপন করছি। আমার ছেলে কোরআনের ১০ পারা হিফজ করেছিল। ওর কি অপরাধ ছিল? আমি ছেলে হারানোর বেদনায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি। আমি আসামীদের বিচার চাই। আমি আসামীদের ফাঁসি চাই। তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এটিই আমার জবানবন্দি।’

এরপর আইনজীবীরা মুস্তাকিমের বাবাকে জেরা করেন। দুজন আইনজীবী বলেন, আপনি সন্তান হারিয়ে শোকাহত। আপনার জন্য আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে।

গতকালও দ্বিতীয়দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে চার আসামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এ চারজন হলেনÑশাহবাগ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। এদিকে সাবেক ডিএমপি কমিশনারসহ অপর চার আসামী এখনও পলাতক রয়েছেন।

গত ৩ জুন পলাতক চার পুলিশ কর্মকর্তাকে হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২৫ মে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুলে গুলী করে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথম আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ২৫ মে এ মামলায় আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

গত ১৪ জুলাই এ মামলায় পলাতক চার আসামীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলী চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুজনকে জেরা করেন আসামীপক্ষের আইনজীবীরা। এর মধ্যে আরশাদের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। সুজন ও নাসিরুলের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী আবুল হোসেন ও ইমাজ হোসেন ইমনের পক্ষে আইনজীবী মো. জিয়াউর রশিদ জেরা করেন। সবশেষ পলাতক চার আসামীর পক্ষে সাক্ষী পলাশকে জেরা করেনরাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী কুতুবউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে, ১১ আগস্ট প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। এদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সূচনা বক্তব্য শেষে মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন শহিদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ।

সাক্ষী হয়েই নিজের ছেলেসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অন্যান্য নিহত-আহতদের জন্য দায়ীদের ফাঁসি চেয়েছেন এই বাবা।

পলাশের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে কিছু সময় মুলতবি বা বিরতি দেন ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তীতে জেরা শুরু হয়। এর মধ্যে আরশাদের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। সুজন ও নাসিরুলের পক্ষে জেরা করেন আইনজীবী আবুল হোসেন ও ইমাজ হোসেন ইমনের পক্ষে আইনজীবী মো. জিয়াউর রশিদ জেরা করেন। সবশেষ পলাতক চার আসামীর পক্ষে সাক্ষী পলাশকে জেরা করেনরাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী কুতুবউদ্দিন।

এদিকে, গতকালও কারাগার থেকে এ মামলার চার আসামীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তারা হলেনÑ শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

এর আগে, ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলী চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।