রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার শুনানিতে সাক্ষী না আসায় প্রসিকিউশনের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় গতকাল সোমবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২-এ সাক্ষী হাজির করতে পারেনি প্রসিকিউশন। তাই আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। প্রসিকিউটর শেখ মইনুল করিম আবেদন করে বলেন, ‘আজ আমাদের সাক্ষী শারীরিক অসুস্থতার কারণে আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসতে পারেননি। এছাড়া অন্য প্রসিকিউটররা ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন অন্য একটি মামলা (শেখ হাসিনার) নিয়ে ব্যস্ত আছেন। তাই আমাদের এই মামলায় ২০ অক্টোবরের পরে সাক্ষী উপস্থাপন করতে চাইছি।’
এসময় প্রসিকিউশনকে উদ্দেশ করে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘সাক্ষী ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে হাজির হতে পারেনি, এটা কি লেখা যায়? আপনারা যা বলছেন, এটা কি বলতে পারেন? এটা যে আদালত অবমাননা তা কি জানেন? যদি কাজই করতে না পারেন, ব্যস্তই থাকেন, তাহলে দুটি ট্রাইব্যুনাল কেন করা হলো? আপনাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। ওখানে (ট্রাইব্যুনাল-১) তো যান শুধু টেলিভিশনে মুখ দেখাতে।’
শুনানি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল গণি টিটু সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রসিকিউশন আজ আবু সাঈদের মামলায় সাক্ষী হাজির করতে না পারায় আদালত কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেছেন। পরে আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন।’
এ বিষয়ে প্রসিকিউটর শেখ মইনুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাক্ষীর অসুস্থতা ও অধিকাংশ প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনাল-১-এ অন্য মামলায় ব্যস্ত থাকায় আমরা ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের আবেদন করেছিলাম। আদালত এ মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২১ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে আবু সাঈদ হত্যা অভিযোগে বেরোবির সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে করা এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে গত ২৮ আগস্ট মামলাটিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এর আগে ২৭ আগস্ট প্রসিকিউশনের পক্ষে সূচনা বক্তব্য দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
ট্রাইব্যুনাল ৬ আগস্ট ৩০ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। আসামীদের মধ্যে বেরোবির সাবেক উপাচার্যসহ ২৪ জন পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই রাষ্ট্রীয় খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।