ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম আরমান বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

দীর্ঘ সময় ধরে গুমের শিকার ভুক্তভোগী আইনজীবী আহমেদ বিন কাশেম আরমান বলেন, সেনানিবাসের ভেতরে সাব-কারাগার বা সাবজেল পর্যায়ে জেল কোড যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কিনা, এবং বন্দিরা কোনোভাবে সার্ভিং সেনা সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে কি না, তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

তিনি সতর্ক করেছেন, যদি না এই নিয়মকানুন কঠোরভাবে পালন করা হয়, তাহলে যারা সাক্ষী ও ভুক্তভোগী তারা তাদের নিরাপত্তা ও জীবনের হুমকির মুখে পড়তে পারেন।

ব্যারিস্টার আরমান আরও বলেন, আসামিরা যদি গ্রেপ্তার অবস্থায় ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করে বিচার প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন, তা গুরুতর সমস্যা তৈরি করবে।

এজন্য সরকারের কাছে তিনি আহ্বান জানান, সাবজেল পর্যায়ে জেল কোড পূর্ণাঙ্গভাবে মানা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে এবং জনসম্মুখে প্রমাণ করতে হবে যে, বন্দিরা কোনোভাবে ক্যান্টনমেন্টের ভিতর থেকে বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারছে না।

‘সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে আশা ব্যক্ত করে ব্যারিস্টার আরমান বলেন, একজন ভুক্তভোগী হিসেবে আমার আশাবাদ যে, দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যদের দিয়ে যেন ভাড়াটে খুনির কাজ যেন আর করা না হয়। জনগণের রক্ষক সেনাবাহিনীকে আর কোনোদিন যেন জনগণের মুখোমুখি করা না হয়। আমাদের সার্বভৌমত্বের রক্ষক সেনাবাহিনী যেন আর কোনোদিন কোনো শক্তির পুতুল না হয়ে যায়, সেটা এই বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।’

সামরিক কর্মকর্তাদের দেশত্যাগে উচ্চপদস্থ কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,

যখন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা দেশ ত্যাগ করেছেন, তখন তাদের পাসপোর্ট বাতিল ও ওয়ারেন্ট ছিল। এ অবস্থায় ক্যান্টনমেন্টের ভেতর থেকে কিভাবে তারা দেশত্যাগ করল; এ ব্যাপারে একটি উচ্চপদস্থ কমিশন গঠন করার আহ্বান জানাচ্ছি।

এ ছাড়া যারা ওই সময় কর্মরত ছিলেন তাদের হাতে কী আমাদের সার্বভৌমত্ব নিরাপদে রয়েছে কিনা? তাই একজন ভুক্তভোগী হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে, যারা দায়িত্বরত ছিল বা যাদের তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় দেশত্যাগ করেছে তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। কেননা যাদের বিচার হচ্ছে এবং যারা দেশত্যাগ করেছে তারা যেন কোনোভাবে এই বিচারকে প্রভাবিত করতে না পারে।

এদিন সকালে গুম-খুনসহ জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলার ওপর শুনানি হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে আদালতে হাজির হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল।