রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গত ৬ থেকে ৭ মাসে ৩ হাজারেরও বেশি অপরাধীকে আইনের আওতায় এনেছে পুলিশ। প্রতিদিন যেসব এলাকায় অপরাধীদের বিচরণ রয়েছে সেখানে অভিযান পরিচালনা করছে। ফলে বেশি অপরাধ হওয়া জায়গায় অপরাধ কমে গেছে। পুলিশের অভিযান চলমান আছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান এ তথ্য জানান। মোহাম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার রাতে মোহাম্মদপুরের জেনেভাক্যাম্পে চালানো অভিযানের বিষয়ে এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় পুলিশ কর্মকর্তা ইবনে মিজান আরও বলেন, পুলিশ মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিন্তু নির্মূল করা সম্ভব নয়।
এর আগে জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে মাদকসহ কয়েকজন মাদককারবারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু কয়েকদিন পরেই তারা আবার জেল থেকে বেরিয়ে একই অপকর্মে জড়ায়। জেনেভা ক্যাম্পে মাদককারবারি নির্মূল করা যাচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি ইবনে মিজান বলেন, আমরা (পুলিশ) মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, একেবারে নির্মূল করা সম্ভব না। বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে আমরা মাদক কারবারিদের ও মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণে রাখি। আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আশা করি আমরা কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছে যাবো। আশা করি, পরিস্থিতি আরও ভালো হবে।
গ্রেফতারের পর আসামি বেরিয়ে এসে একই অপরাধের জড়ানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ হচ্ছে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের একটি পার্ট। আমাদের অংশে যেটুকু রয়েছে, আসামি গ্রেফতার তদন্ত প্রক্রিয়া এটি আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ ভালোভাবে করার চেষ্টা করি। যেন কোনো ত্রুটি না হয়। বাকি যে অংশটুকু- সেটিতে আমাদের কোনো হাত নেই। সেটি অন্য সংস্থা করেছে। এই প্রসঙ্গে আমাদের মন্তব্য না করাই সমিচীন।
মোহাম্মদপুরে অপরাধ বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে তেজগাঁওয়ের ডিসি বলেন, ৫ আগস্টের পর মোহাম্মদপুরে অপরাধের চরম বিস্ফোরণ ঘটেছে। যেসব অপরাধী বাইরে ছিল তারাও চলে এসেছে। মাদক ও সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যখ্যাত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদককারবারি, বিক্রেতা, অস্ত্রের জোগানদাতা ও ককটেল সংরক্ষণকারীসহ ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি। শনিবার বিকেল ৪টা থেকে গতকাল রোববার ভোর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৮টি ককটেল, ২টি পেট্রোল বোমা, ৬টি সামুরাই, ৫টি হেলমেট, ৩টি ছুরি, ১১টি চোরাই মোবাইল ফোন, এবং ৫০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে ডিসি মো. ইবনে মিজান বলেন, মোহাম্মদপুরের আলোচিত স্থান জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়। মাদকের বিস্তারের জন্য এলাকাটি বেশ পরিচিত। পুলিশ নিয়মিতভাবে এখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেল থেকে রোববার ভোর রাত পর্যন্ত ১২০ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। তিনি আরও বলেন, আটককৃতদের মধ্যে অনেকে জেনেভা ক্যাম্পের মাদককারবারি বুনিয়া সোহেল, পিচ্চি রাজা, চুয়া সেলিমের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেকের নাম উঠে এসেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করবে।