‘বিভিন্ন মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি কারাগারে রয়েছেন। তিনি সশরীরে হাজির হচ্ছেন। সাবেক কয়েকজন মন্ত্রীও নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। ওনাদের সমস্যা না হলে আপনারা (সেনা কর্মকর্তা) কেন পারবেন না। ল ইজ ইকুয়্যাল ফর অল।’

গতকাল রোববার র‌্যাবের টিএফআই ও জেআইসি সেলে গুমের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের ভার্চুয়ালি হাজিরার আবেদনের প্রেক্ষিতে এমন মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

গুমসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের সরাসরি না এনে ভার্চুয়ালি শুনানি বা হাজিরার জন্য আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিজবাহ। আবেদনটি মঞ্জুর করতে আদালতের কাছে প্রার্থনা করেন তিনি। তখন তার উদ্দেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও সাবেক মন্ত্রীরা আসতে পারলে ওনাদের সমস্যা কী? এ সময় অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।

ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনাদের এ বিষয়ে অপারগতা থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। পরবর্তী তারিখে শুনানি করতে চাইলে আমরা সেটিও করব।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী মাসুদ সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা ভার্চুয়ালি শুনানির জন্য একটি আবেদন দিয়েছি। এ ব্যাপারে সময় চেয়েছে প্রসিকিউশন। এতে আমরাও একমত পোষণ করেছি। শুনানির সময় আইন সবার জন্য সমান বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এ নিয়ে আগামী ৩ ও ৭ ডিসেম্বর শুনানি হবে। এরপর বলা যাবে এ বিষয়ে (ভার্চুয়াল হাজিরা)।

এদিকে, গতকাল গুমের দুই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির জন্য ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভিন্ন ভিন্ন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন ধার্য করেন। প্যানেলের অন্য সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গুমের দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনকে আসামী করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তার রয়েছেন ১৩ জন। তারা হলেন- র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।