গৃহবধূ রোকসানা বেগম (৪৬) ও তাঁর দেবর গোলাম রহমান মিলে বাড়ির পাশে হুড়মবিলে ২৯ শতক জমিতে এবার বোরো চাষ করেছিলেন। ওই জমিই তাঁদের সম্বল। ধানগুলোতে পাক ধরেছিল। কয়েকদিন পরেই ঘরে তুলতে পারতেন। তবে এর আগেই প্রভাবশালী বিদ্যুৎ হোসেন লোকজন নিয়ে গৃহবধূ রোকসানা বেগমসহ কয়েকজন কৃষকের প্রায় ১০০ বিঘা জমির চারপাশে মাটির সীমানা দিয়ে ঘিরে ফেলেন পুকুর খননের জন্য। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে খনকাজে ব্যবহৃত এক্সেভেটরের ক্ষতিসহ একজনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পুকুর খনন বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি আটক হওয়া ব্যক্তিকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (সংশোধিত ২০২৩) এর ৭ (ক) ধারা লঙ্ঘনের দায়ে একই আইনের ১৫ (১) ধারায় দুই লাখ টাকার অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে দুই মাসের জেল প্রদান করা হয়। দণ্ড পাওয়া ওই ব্যক্তির নাম মোজাহারুল ইসলাম চপল (৩৬)। তিনি জেলার মোহনপুর উপজেলার বিদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের করখন্ড গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী বিদ্যুৎ হোসেন কিছুদিন আগে পশ্চিম দৌলতপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক কৃষকের জমি দখল করে পুকুর খননের প্রক্রিয়া শুরু করেন। ওইসব জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। তিনি এক্সেভেটর দিয়ে প্রায় ১০০ বিঘা জমির চারপাশে ঘিরে ফেলে পুকুর খনন শুরু করেন। এসময় জমির মালিকেরা বাধা দিতে গেলে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে হুমকী দেওয়া হয়। নিরূপায়ে কৃষকদের পক্ষে গৃহবধূর স্বামী মাইনুদ্দিনসহ দুই ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন আইনগত অপরাধ। কৃষকদের জমি দখল করে পুকুর খননের দৃশ্য দেখা গেছে। কৃষকদের জমি উদ্ধার করা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জোরপূর্বক জমি দখল করে পুকুর খনন করার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পুকুর খননের সহায়তা করার দায়ে ঘটনাস্থলে মোজাহারুল ইসলাম নামে একজনকে আটক করা হয়।