DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

অপরাধ

কাপাসিয়ায় দেবরের ছুরিকাঘাতে ভাবির মর্মান্তিক মৃত্যু

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পারিবারিক বিরোধের জেরে দেবরের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী মোসা. বৃষ্টি আক্তার (২৪)। রোববার (২ মার্চ) দুপুরে কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের কুশদী গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। হত্যার পর থেকে ঘাতক দেবর মো. ইলিয়াস মিয়া (২০) পলাতক রয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর
deadbody

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় পারিবারিক বিরোধের জেরে দেবরের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী মোসা. বৃষ্টি আক্তার (২৪)। রোববার (২ মার্চ) দুপুরে কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের কুশদী গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। হত্যার পর থেকে ঘাতক দেবর মো. ইলিয়াস মিয়া (২০) পলাতক রয়েছে।

নিহত বৃষ্টি আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাসিন্দা। কয়েক বছর আগে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কুশদী গ্রামের মো. সেলিম মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তিনি স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছিলেন। তবে তার স্বামী সেলিম দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে প্রবাসী হিসেবে কর্মরত।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন দুপুরে বাড়ির অন্য সদস্যরা ব্যস্ত থাকার সুযোগে দেবর ইলিয়াস ধারালো ছুরি হাতে ভাবি বৃষ্টির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আকস্মিক হামলায় বৃষ্টি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। তবে পথেই তার মৃত্যু হয়।

নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, ঘাতক ইলিয়াস দীর্ঘদিন ধরে বেকার জীবনযাপন করছিল এবং মাদকাসক্ত ছিল। প্রায়ই সে তার প্রবাসী ভাই সেলিমের কাছে টাকা দাবি করত। টাকা না পেলেই সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠত এবং বাড়িতে অশান্তি সৃষ্টি করত।

নিহতের স্বজনের ভাষ্যমতে, "ইলিয়াস প্রতিদিন নেশা করত, টাকা চাইলেই দিতে হতো। সেলিম প্রবাসে থেকে সবসময় টাকা পাঠাতে পারতেন না। তাই প্রায়ই বৃষ্টির সঙ্গে ইলিয়াসের কথা কাটাকাটি হতো। কিন্তু এত বড় সর্বনাশ যে হয়ে যাবে, তা তাদের জানাছিলনা!"

এ হত্যাকাণ্ডের পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, "নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইলিয়াস ছিল বেকার ও মাদকাসক্ত। সে প্রায়ই টাকার জন্য বাড়িতে ঝগড়া করত। ঘটনার দিন তার বাবা নামাজ পড়তে ও মা টয়লেটে ছিলেন। সেই সুযোগে ইলিয়াস ভাবিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে।"

নিহত বৃষ্টির মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের পরিবেশ। প্রতিবেশীরা দ্রুত ঘাতক ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।