স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে একের পর এক প্রাণী নিখোঁজ ও চুরির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, “এত দুর্লভ প্রাণী যদি চুরি হয় আর আমরা কেবল চাকরিচ্যুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকি, তাহলে দায়মুক্তির সংস্কৃতি কখনোই বন্ধ হবে না। এবার এমন শাস্তি হতে হবে, যা হবে দৃষ্টান্তমূলক।”

গত বুধবার (৯ এপ্রিল) গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উপদেষ্টা বলেন, শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্বলতা নয়, এই ঘটনার পেছনে রয়েছে দায়িত্বশীলদের চরম উদাসীনতা। তিনি জানান, ইতোমধ্যে পার্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বিশেষ করে সিসিটিভি কাভারেজের সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং বন্যপ্রাণী অপরাধ তদন্তে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করে একটি স্বচ্ছ ও শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, “একটি লেমুর নিখোঁজ মানে শুধু একটি প্রাণী হারানো নয় এটি আমাদের দায়িত্ববোধের হারিয়ে যাওয়ার প্রতিচ্ছবি।”

তিনি আরও বলেন, “এই পার্ক শুধু দর্শনের জায়গা নয়, এটি হওয়া উচিত শিক্ষা ও সহমর্মিতার স্থান। অথচ কিছু হাতি ও জাগুয়ারের আচরণগত অস্বাভাবিকতা দেখে আমি শঙ্কিত হয়েছি। তাদের পরিবেশগত ও মানসিক চাহিদা পূরণে আমরা কি সত্যিই সচেষ্ট?”

পার্ক উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকারি প্রকল্প এলে কাজ করবোÍএমন মানসিকতা বদলাতে হবে। সাফারি পার্ক একটি জাতীয় সম্পদ। এর রক্ষণাবেক্ষণে নিয়মিত বরাদ্দ ও আন্তরিকতা জরুরি।” তিনি জানান, হাতিদের কল্যাণে শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ভারতের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে একটি নতুন প্রকল্পের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে সরকার।

মদন (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার মদনে আজিজুল ইসলাম (২২) ও রিমা আক্তার (১৯) নামের স্বামীর স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে উপজেলার বাঁশরী কান্দাপাড়ার নিজ বাড়ির পিছন থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আজিজুল ইসলাম বাঁশরী কান্দাপাড়া গ্রামের মাজু মিয়ার ছেলে। তারই স্ত্রী রিমা আক্তার একই উপজেলার ইমদাদপুর গ্রামের চাঁন মিয়ার মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ৭ মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক করে আজিজুল ইসলাম বিয়ে করেন রিমা আক্তারকে। পরে দুই জনেই চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিকের কাজ নেয়। এবার পরিবারের লোকজনের সাথে ঈদ করতে বাড়িতে আসে। আজ বুধবার চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য বাসের টিকিটেও সংগ্রহ করে। রাতে চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিকেলে বাড়ির পিছনে রেইনট্রি গাছে স্বামী স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় প্রতিবেশী লোকজন। পরে মদন থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে। মদন থানার ওসি তদন্ত দেবাংশু কুমার জানান, ‘ খবর পেয়ে মরদেহ দুইটি উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুইটি নেত্রকোনা মগে পাঠানো হবে। পরিবারের লোকজনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘

গাজীপুর: গাজীপুরের চান্দনায় এক হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডের রহস্য মাত্র ২৪ ঘণ্টায় উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নিহত আল আমিন (৩৫) পেশায় একজন ভ্রাম্যমাণ পান-সিগারেট বিক্রেতা। নিজের কষ্টার্জিত জীবনের করুণ পরিণতি হলো এক যুবকের বিকৃত কাম-লালসার শিকার হয়ে গলাটিপে মৃত্যু। ঘটনার সূত্রপাত ৩ এপ্রিল, যখন গাজীপুরে বসবাসকারী আল আমিনের সঙ্গে পরিচয় হয় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের যুবক মাইদ হোসেন (২২)-এর। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আল আমিন ওই যুবককে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে। তবে ৫ এপ্রিল ভোরে আল আমিন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করলে, ব্যথা ও মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে মাইদ হোসেন তাকে গলাটিপে হত্যা করে। এরপর গলায় গামছা পেঁচিয়ে নিশ্চিত করে দেন মৃত্যু।

ঘটনার দুইদিন পর, ৭ এপ্রিল ঘর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকলে প্রতিবেশীরা তার অর্ধগলিত লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং নিহতের মা আকলিমা বেগম বাদী হয়ে বাসন থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ক্লুলেস মামলাটির তদন্তে নামে পিবিআই গাজীপুর। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে মাইদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয় শ্রীপুর উপজেলার শৈলাট এলাকা থেকে। তার কাছ থেকে নিহত আল আমিনের ব্যবহৃত বাটন মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মাইদ হোসেন ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছে। পুলিশ জানায়, আল আমিনের মৃত্যু নিছক একটি যৌন লালসার পরিণতি নয়, এটি এক নিষ্ঠুর বিশ্বাসভঙ্গের পরিণতি, যেখানে একটি জীবন অনর্থক ঝরে গেছে।

পিবিআই গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড শুধু একটি অপরাধ নয়, বরং আমাদের সামাজিক বাস্তবতার এক নির্মম প্রতিচ্ছবি। স্বল্প আয়ের একজন মানুষ জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এমন ভয়াবহতার শিকার হবেন, তা সত্যিই দুঃখজনক।

গাজীপুরবাসীর প্রত্যাশা, এমন অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে আইন-শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আস্থা আরও দৃঢ় হবে।

শার্শা (যশোর) : যশোরের শার্শায় বাওড়ে নৌকা চালানোকে কেন্দ্র করে দু-গ্রুপের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দিন ধরে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে শার্শা উপজেলার পাঁটভুলোট গ্রামে। এ ব্যাপারে ১৩ জনকে আসামী করে একপক্ষ শার্শা থানায় একটি মামলা করেছে। সংঘর্ষে আহতরা হলেন গোগার পাঁচভুলোট গ্রামের রাজু বদ্দি(৩৫), আনার(৬০), ইশরাম(২৩), ইশবাল হাসান(২৩), হযরত আলী (২৮)। আহতদের মধ্যে রাজু বদ্দির অবস্থা আশংকজনক। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে আহত আনারকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আহত রাজু বদ্দির পিতা আজিবদ্দি জানান, পুটভালী বাওড়ে নৌকা চালানোকে কেন্দ্র করে নরাত্রাসীরা তারছেলে রাজুকে বেদম ভাবে কুপিয়ে জখম করেছে। তিনি জানান তার ছেলে রাজুর অবস্থা আশংক জনক। এ ব্যাপারে তিনি বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামী করে শার্শা থানায় মামলা দায়ের করেছে।

অপরদিকে আহত আনার জানান, নৌকা চালানোকে কেন্দ্র করে রাজু বদ্দি ৩ জনকে পিটিয়ে জখম করে। এরই জের ধরে তার রাজু বদ্দিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এরপর রাজু বদ্দির স্বজনেরা খবর পেয়ে আনারসহ তারলোক জনের উপর হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা বোমার বিষ্ফোরন ঘটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে। এ ঘঁনার পরতেকে ভুলোট এলাকায় সাধারন জনমনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে যে কোন মুহুর্তে আবারো সংঘর্ষ বাধতে পারে বলে এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জকে এম রবিউল ইসলাম জানান,গোগার ভুলোট গ্রামে বাওড়ে নৌকা চালানোকে কেন্দ্র করে দুগ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে। তিনি বলেন এ ব্যাপারে এক পক্ষ থানায় মামলা দায়ের করেছে। তিনি আরও বলেন অপর পক্ষ অভিযোগ করলে তা অভিযোগ নেওয়া হবে। তবে উভয় পক্ষের অভিযোগ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।