DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

অপরাধ

দিরাই-শাল্লায় জলমহালে আবাধে মাছ লুট ॥ খলায় আগুন

সুনামগঞ্জের বিভিন্ন জলমহালে অবাধে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেই চলছে। হাজার হাজার মাছ শিকারী দলবেঁধে মাছ লুটের এই মহোৎসবে অংশগ্রহণ করছে। মাছ লুন্ঠনকারীদের জনস্রোতকে আটকাতে প্রশাসন পুলিশ এমনকি সেনাবাহিনীও পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে।

Printed Edition
Default Image - DS

দিরাই-শাল্লা (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জের বিভিন্ন জলমহালে অবাধে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেই চলছে। হাজার হাজার মাছ শিকারী দলবেঁধে মাছ লুটের এই মহোৎসবে অংশগ্রহণ করছে। মাছ লুন্ঠনকারীদের জনস্রোতকে আটকাতে প্রশাসন পুলিশ এমনকি সেনাবাহিনীও পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে।

কোন কোন জলমহালে মাছ শিকারের পর খলা ঘর পুড়িয়ে দেয়ারও খবর পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার সকালে শাল্লার কাশীপুর লাইয়ার দিঘা গ্রুপের (সত্তুয়া) জলমহালে প্রশাসনের সামনেই খেলাঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সেখানে দ্বিতীয় দফায় জোরপূর্বক মাছ লুট করার সময় পুলিশ ও প্রশাসনের সাথে বিক্ষোভ জনতার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে কয়েকজন পুলিশ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই ঘটনার পর পরই সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ ও জেলা প্রশাসক ড.মোঃ ইলিয়াস মিয়া, দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, শাল্লা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পলো বাইছের নামে শাল্লায় বেশ কয়েকটি জলমহালের মাছ লুটপাট করেছে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। গত এক সপ্তাহে সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলার ১২টি বিলে মাছ লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসব বিল থেকে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার মাছ লুট হয়েছে বলে দাবি জলমহাল ইজারাদারের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিরাইয়ের কামান বিলে মাছ লুটপাটের মধ্য দিয়ে জলমহাল লুটের উৎসব শুরু হয় এই দুই উপজেলায়। কাগজপত্রে এই বিলের ইজারাদার চরনারচর বিএম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। সমিতির নামে ইজারা থাকলেও সমিতির আড়ালে এই জলমহালের মালিক হিসেবে রয়েছেন দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি জয় কুমার বৈষ্ণব।

ঘটনাস্থলে এসে জেলা প্রশাসক ড. মোঃ ইলিয়াস মিয়া জুমার নামযের পর স্থানীয় শ্যামারচর বাজার জামে মসজিদে সবার উদ্দেশ্য বলেন কেউ যেন এমন কর্মকাণ্ডে না জড়ায়, দেশের পরিবেশ শান্ত রাখতে হবে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। পাশাপাশি যারা এসবের ইন্ধন দিচ্ছে তাদের বিচার হবে। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, জলমহাল লুটপাটের ঘটনায় ইজারা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইজারাদাররা যদি মামলা করেন, আমরা আইনানুগভাবে শক্ত ব্যবস্থা নেব। যাতে এধরনের দুষ্কৃতিকারীরা ছাড় না পায়। লুটের আশঙ্কায় থাকা অন্য বিলগুলোর দিকে নজর রাখতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গ্রাম পুলিশকে বলা হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেউ যাতে এ ধরনের ঘটনায় যুক্ত না হন এবং রাষ্ট্রের রাজস্বের ক্ষতি না করেন।