কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগে রিনা খাতুন (৪০) নামের এক নারীকে গাছে বেঁধে মারধর ও মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ওই নারীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, গরু, ছাগল ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের অভিযোগও উঠেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিন নারীকে ছাড়াতে বুধবার সকালে থানা ঘেরাও করে তাদের স্বজনরা।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি ক‌রে কুমারখালী থানায় মামলা করেন।

স্বজনদের দাবি পুলিশ মীমাংসা করার আশ্বাসে থানায় ডেকে এনে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন, মোমিনের স্ত্রী পারভিন খাতুন ও বক্করের স্ত্রী লিপি খাতুন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত আটটার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে প্রতিবেশী রিপন আলীর ঘরে ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাংস চুরির অভিযোগে রিনা খাতুনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়। এরপর রিনার স্বামী জাহাঙ্গীর এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।

পরে স্থানীয় নজরুল, কাশেম, রিপনসহ শতাধিক নারী-পুরুষ রাত ৮টার পরে রিনার বাড়ি ভাঙচুর করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। ফের রিপনের বাড়ি নিয়ে এসে তাকে ব্যাপক মারপিট ও মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। পরে সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বর শাহ আলমের উপস্থিতিতে সালিশ বসিয়ে দুটি গরু, একটা ছাগল ও স্বর্ণালংকারের বিনিময়ে রিনাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

রিনা বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার শুরু হয়।

মির্জাপুর গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রিপন অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই নারী (রিনা খাতুন) আমার বাড়ি থেকে ৪১ হাজার টাকা ও মাংস চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। পুলিশ চোরের পক্ষ নিয়ে আমার স্ত্রীসহ তিনজনকে ধরে এনেছে। আমরা চোরের শাস্তি ও আটকদের ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে‌ছি’

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনজন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের পরিবারের লোকজন মীমাংসার দাবিতে থানায় একটু হট্টগোল করেছিল। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজ‌তে পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে।’