স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ
গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে ময়মনসিংহের ভালুকায় এক নারী ও তার দুই শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ফুটওভারব্রিজের নিচ থেকে তাকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত নজরুল ইসলাম (৩৫) নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার সেনেরবাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি নিহত নারীর দেবর এবং একজন পেশাদার রিকশাচালক।
ভালুকা মডেল থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, নেত্রকোনার রফিকুল ইসলাম তার স্ত্রী ময়না খাতুন (৩০), কন্যা রাইসা আক্তার (৪) ও ছেলে মো. নীরব (২)–কে নিয়ে ভালুকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিনি স্থানীয় একটি স্পিনিং মিলে কাজ করতেন। তার ছোট ভাই নজরুল ইসলামও একই বাসায় থাকতেন।
সোমবার সকালে কাজে বেরিয়ে বাসায় ফিরে রফিকুল তালাবদ্ধ ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তানের গলাকাটা লাশ দেখতে পান। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকেই নজরুল পলাতক ছিল। রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, পারিবারিক কলহ বা সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে নজরুল এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। তাকে শনাক্ত করে আটক করা হয় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. নাদির উজ জামান জানান, নজরুল গোপনে ঢাকা ছাড়ার চেষ্টা করছিল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে তাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল ওই ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। পরে তাকে ভালুকা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে, নজরুল ইসলাম এর আগেও জয়দেবপুর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। তিনি সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও নৃশংস অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।
স্থানীয়রা জানান, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড এলাকার মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। সাধারণ মানুষ নজরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।