নান্দাইল (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা: ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক গার্মেন্টস কর্মী (১৬)কে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তার প্রেমিক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে। রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা বলে কৌশলে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে একটি কলাবাগানে এই পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) নান্দাইল মডেল থানায় প্রেমিক মামুন মিয়া সহ চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানিয়েছে ধর্ষিতার পরিবার। মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের উন্দাইল গ্রামের মো. মামুন মিয়া (২৫), মো. মমিন উদ্দিন (২৩), মো. জাহাঙ্গীর আলম (২৪) এবং মো. শাকিল মিয়া (২৩)। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকারী ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন সহ অভিযুক্ত আসামীরা পলাতক রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরী উপজেলার চ-ীপাশা ইউনিয়নের বাঁশহাটি এলাকার ম্যাজিক গার্মেন্টসে চাকরি করে। কারখানায় যাতায়াতের সুবাদে প্রধান আসামি মামুনের সঙ্গে তার পরিচয় এবং পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গার্মেন্টস ছুটির পর প্রেমিক মামুন ও তার সহযোগীরা কিশোরীকে একটি রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয়। পরে তাকে কৌশলে একটি অটোরিকশায় তুলে গাংগাইল ইউনিয়নের উন্দাইল এলাকার একটি কলাবাগানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রেমিক মামুন এবং তার সহযোগী মমিন উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম তাকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। মামলার চতুর্থ আসামি শাকিল মিয়া এই কাজে সহায়তা করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরী জানায়, "মামুন আমাকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কলাবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে মারধরও করে।" ভুক্তভোগীর বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, "আমি একজন গরিব মানুষ। আমার মেয়েটা গার্মেন্টসে চাকরি করে সংসার চালায়। যারা আমার মেয়ের এমন সর্বনাশ করেছে, আমি তাদের কঠিন বিচার চাই। মামলা করার পরও আসামিরা আমাকে হুমকি দিচ্ছে।"
স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদ হাসান রকি জানান, "আমাদের পুকুরপাড়ের কলাবাগানে এই ঘটনা ঘটে। চিৎকারের শব্দ শুনে আমি টর্চলাইট নিয়ে বেরিয়ে দেখি মামুন, জাহাঙ্গীর ও মমিন মেয়েটিকে রেখে দৌড়ে পালাচ্ছে। পরে আমি বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানাই।"
নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগী কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"