কক্সবাজার দক্ষিণ সংবাদদাতা : কক্সবাজার সদর উপজেলায় জামায়াত নেতা হাফেজ আমজাদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী রাফি ও তার সহযোগীরা। গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার চৌফলদ-ী ইউনিয়নের নতুন মহাল বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জামায়াত নেতার আমজাদ হোসেন (২৫) ওই এলাকার মৃত নুরুল কবিরের ছেলে। তিনি একজন কুরআনের হাফেজ ও জামায়াতের যুব বিভাগের চৌফলদন্ডী ইউনিটের সেক্রেটারি ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানান- আমজাদ দীর্ঘদিন সৌদিতে ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে তিনি জামায়াতের যুব বিভাগে সক্রিয় হন। শিগগিরই তার বিয়ের আয়োজন হওয়ার কথা ছিল। ঘাতক ছাত্রলীগ নেতার নাম রাফি। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের ওয়ার্ড সভাপতি এবং একই এলাকার ছৈয়দ নূরের ছেলে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন- জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও মামলা-মোকদ্দমার জেরে রাফি ও তার সহযোগীরা আমজাদের ওপর হামলা চালান। নতুন মহাল বাজারে প্রকাশ্যে রাফি ও আরও দুই যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাফেজ আমজাদকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। এতে তার পেটে দুটি ও পিঠে একটি গুরুতর ক্ষত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঈদগাঁও হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

নিহতের বড় ভাই ও কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন বলেন- আমার ভাই আমজাদকে ছাত্রলীগের চিহ্নিত অস্ত্রধারীরা পূর্ব-শত্রুতার জেরে নির্মমভাবে খুন করেছে। আমি এর বিচার ও খুনিদের ফাঁসি চাই। কক্সবাজার সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আজিজুর রহমান অভিযোগ করেন- রাফি ও তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় জমি দখল ও মামলা-মোকদ্দমা চালিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এ হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে। এদিকে নিহত জামায়াত নেতা হাফেজ আমজাদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে আমজাদের খুনীদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম, সদর উপজেলা আমীর অধ্যাপক খুরশীদ আলম এবং সেক্রেটারি আজিজুর রহমান।

এছাড়াও নিহত আমজাদের বড় ভাই সাদ্দাম হোসেন ছাত্রদল নেতা হওয়ায় উক্ত হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে রাতে কক্সবাজার শহরে বিক্ষোভ করেছে জেলা ছাত্রদল, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারাও অংশ নেন। সেখান থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান বলেন- সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনো মামলার কোনো এজাহার জমা পড়েনি। তবে ঘটনায় জড়িত এহসান নামের এক ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।