অগ্রণী ব্যাংকের দিলকুশা শাখায় শেখ হাসিনার নামে থাকা দুটি লকার ভেঙে স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি সোনার বার, কয়েন, মুক্তা, হীরা ও বিভিন্ন মূল্যবান রত্নসহ বিপুল সম্পদ পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পাওয়া উপহারসামগ্রী রাষ্ট্রীয় ধনভাণ্ডার বা তোষাখানায় জমা না দিয়ে তিনি ব্যক্তিগত লকারে রেখেছিলেন, যা আইনত নিষিদ্ধ। এ কারণে ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

মোট ৮৩২ ভরি স্বর্ণালংকারের তথ্য নিশ্চিত হলেও পাথরগুলোর গুণগত মান যাচাইয়ের কাজ এখনও চলছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্পদের সঠিক মূল্য নির্ধারণ করতে আরও কয়েকদিন লাগবে।

উদ্ধার করা সব সম্পদ রাষ্ট্রীয় জিম্মায় অগ্রণী ব্যাংকের আরেকটি লকারে সিলগালা অবস্থায় রাখা হয়েছে। ঘটনাটি রাজধানীর সচিবালয় থেকে ব্যাংকপাড়া পর্যন্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘ সময়ে শেখ হাসিনার সাধারণ জীবনযাপনের দাবি বহুবার শুনেছেন। এখন লকারে পাওয়া সম্পদের পরিমাণে তারা বিস্মিত।

অগ্রণী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, শেখ হাসিনার লকারে পাওয়া সম্পদ নিয়ে ব্যাংকটি এখন সবার নজরে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি,

এদিকে পূবালী ব্যাংকের করপোরেট শাখায় তার নামে থাকা আরেকটি লকারও ভাঙা হয়েছে। সেখানে একটি খালি পাটের বস্তা ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, লকারজামা সম্পদ আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত বছর সিআইসি লকার সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে চিঠি দিলেও পূবালী ব্যাংক বিষয়টি গোপন রাখায় ব্যাংকের এমডিকে শোকজ করা হয়।

শেখ হাসিনা আয়কর নথিতে মাত্র ১৩ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার থাকার তথ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংকে পাওয়া ৮২৩ ভরি স্বর্ণের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১৭ কোটি টাকা। সাথে থাকা রত্নপাথরের মূল্য যোগ হলে এটি আরও বাড়বে। আয়কর আইনজীবীরা বলছেন, তথ্য গোপন করা প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

মতিঝিলের অগ্রণী ব্যাংকের ৭৫১ ও ৭৫৩ নম্বর লকার এবং পূবালী ব্যাংকের ১২৮ নম্বর ভল্ট ভাঙতে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রায় ১০ ঘণ্টার অভিযান চালানো হয়। দুদক ও সিআইসির কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে লকারগুলো জব্দ করা হলেও মালিকের অনুপস্থিতিতে খোলা সম্ভব হয়নি। দুদকের আবেদন ও আদালতের অনুমতির পর এবার লকার ভাঙার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।