সীতাকুণ্ডে যেন থামছেনা খুনের ঘটনা। একেরপর এক খুন হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে ২খুনের পর এবার স্বামীর হাতে প্রিয়তমা স্ত্রী খুনের ঘটনা ঘটেছে সীতাকুণ্ডে।
নিজ গৃহে প্রিয়তম স্বামীর হাতে খুন হয়েছে স্ত্রী সীমা আক্তার (২৫)। উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের চাড়ালকান্দি এলাকার কাজী শহীদুল্লার বাড়িতে গত ১৬ এপ্রিল বুধবার রাত ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর সীতাকুণ্ডে ৫টি হত্যাকান্ড সংঘঠিত হল। নিহত সীমার এক আত্মীয় জানান, অল্পদিনের সংসারে তাদের স্বামী-স্ত্রীর কলহ লেগেই থাকতো। গত ১৬ এপ্রিল রাত এগারোটায় সীমা আক্তারের সাথে কলহের এক পর্যায়ে স্ত্রীর পেটে ছুড়িকাঘাত করেন স্বামী মাহমুদুল হক। এসময় সীমার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে মাহমুদুল পালিয়ে যান। পাশের বাসায় থাকা সীমার পরিবারের লোকজন এসে দেখতে পান ছুরিকাহত সীমা উঠানে পড়ে আছে। তখনও সীমার পেটে ছুরি ঢুকানো। পরে তাকে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সীমা আক্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদুল হক কবির (২২) জিপিএইচ কারখানায় চাকরির সুবাদে স্ত্রী সীমা আক্তারসহ চাড়ালকান্দি এলাকায় ভাড়া থাকতেন। মাত্র মাসখানেক আগে তারা বাসাটি ভাড়া নেন। দেড় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। এর মধ্যে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে তাদের। বর্তমানে মাত্র ৩ মাস বয়স ওই কন্যা সন্তানটির। পাশাপাশি বাসায় ভাড়া থাকেন সীমার বাবা-মা ও ভাই-বোন।
প্রসঙ্গত, সীতাকুণ্ডে গত ২০ দিনে দুই ইউনিয়নে মাত্র ৫ কি.মি. দূরত্বে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে গত ২৬ মার্চ ইফতারের পর বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের হাতিলোডা গ্রামে উপজেলা কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এর কয়েকদিন পর ১০ এপ্রিল বিকাল ৫টায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুরাদপুর ইউনিয়নের গোপ্তাখালী এলাকার যুবলীগ নেতা মুসলিম উদ্দিনকে। সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল বুধবার নিজের স্বামীর হাতে খুন হলেন সীমা আক্তার। এছাড়া বিগত ৫ আগস্টের পর সীতাকুণ্ডের বড় দারোগা হাট ও জঙ্গল ছলিমপুর এলাকায় পৃথক দুটি হত্যাকান্ড ঘটে।
এদিকে সীতাকুণ্ডে একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনায় জনমনে অস্বস্তি দেখা দিলেও বিচলিত নন ওসি মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলেছে এখানে আমার কি করার আছে? তবে সীমা আক্তার হত্যার ঘটনায় মামলা হলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন ওসি মজিবুর রহমান।