অপরাধ
গাজীপুর কারাগারে দুই বন্দির মৃত্যু, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
গাজীপুরের জেলা কারাগারে গলায় কম্বল পেঁচিয়ে এক কয়েদি আত্মহত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া একই দিন গাজীপুরস্থ কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে অপর এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুরের জেলা কারাগারে গলায় কম্বল পেঁচিয়ে এক কয়েদি আত্মহত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া একই দিন গাজীপুরস্থ কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে অপর এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে গাজীপুর জেলা কারাগারের সেলে লোহার দড়জার সাথে গলায় কম্বল পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওমর ফারুক (৩৩)। বিষয়টি টের পেয়ে কারারক্ষীরা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এসময় অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো জানান, ওমর ফারুক ২০১৯ সালের একটি মারধোরের মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। এছাড়া কারাগারের ভেতরে গত ২৯ জানুয়ারি কেইস টেবিলে সার্জেন্ট ইনস্টাক্টর ফয়েজ উদ্দিনকে মেরে রক্তাক্ত করে। ওই কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছিল। সে কাপাসিয়ার টোক ইউনিয়নের বীরউজলী গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে। বিকেলে নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
কাশিমপুর কারাগারে অপর কয়েদি দুলাল উদ্দিনের মৃত্যুঃ
একই রাতে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ এ দুলাল উদ্দিন (৫২)নামের এক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি বুকের ব্যথা অনুভব করেন। রাত ১১টার দিকে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দুলাল উদ্দিন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় টোক ইউনিয়নের কেন্দুয়াব গ্রামের মহিন উদ্দিনের ছেলে। তিনি চিকিৎসার জন্য ১৮ জানুয়ারি ঢাকা থেকে কাশিমপুর কারাগারে ফেরেন।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেলার রফিক কাদের বলেন, কয়েদীর আত্মহত্যার বিষয়ে কাশিপুর কেনবদ্রীয় কারাগার পার্ট-২ এর সিনিয়র জেলসুপার আল মানুনকে প্রধান করে ৩সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যা হলো- কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার সর্বোত্ত দেওয়ান ও কাশামপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের ডেপুটি জেলার মোঃ ইব্রাহিম। আগামী ৩ দিনে মধ্যে এই তদন্ত কমাটিকে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঢাক ডিআইজি প্রিজনের নির্দশে ৩ সদস্যেরর এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে কাশিমপুর কারাগারের জেলার তরিকুল ইসলাম ওই কারাগারে বন্দি মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা আক্তার জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুরতহাল রিপোর্টে কোন অসঙ্গতি দেখা গেলে প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
এই মৃত্যুর ঘটনায় কারা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কারাগারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা নিশ্চিত, সেই বিষয়েও তদন্তের দাবি উঠছে।