গাজীপুরে দিনের শেষে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণের শিকার হয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। দুর্বৃত্তরা তাকে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধর করে মুক্তিপণ আদায় করে। চার ঘণ্টার দুঃসহ নাটকীয়তার পর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় গভীর জঙ্গলে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। অপহৃত কর্মকর্তা মোকসেদ আলী (৫৮) ইসলামী ব্যাংকের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা শাখার জেনারেল ব্যাংকিং ইনচার্জ এবং ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এফএভিপি)। তিনি গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। বুধবার সন্ধ্যায় অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে মাওনা চৌরাস্তার পল্লী বিদ্যুৎ মোড় থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।

ভিকটিমের পরিবার জানায়, প্রাইভেটকারে ভাড়া ঠিক করে মোকসেদ আলীসহ তিনজন যাত্রী ওঠেন। গাড়ি চলার কিছুক্ষণ পর বাঘেরবাজার এলাকায় তার পাশের যাত্রী বেশে থাকা অপহরণকারীরা হঠাৎ চোখ ও হাত-পা বেঁধে ফেলে, মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে তার মোবাইল ব্যবহার করে স্ত্রীকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। চাপের মুখে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা, পরে আরও ৩০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠাতে হয় পরিবারকে। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন স্থানে ঘোরানোর পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সিডষ্টোর এলাকার একটি জঙ্গলে ফেলে যায় অপহরণকারীরা। পরে তিনি নিজ উদ্যোগে বাসায় ফেরেন।

গাজীপুর মেট্রো পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ), রবিউল হাসান বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে। মোবাইল ট্রেসিংসহ বিভিন্ন কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের অপরাধ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না-এটিই প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের তৎপরতায় অপহরণকারীরা ভিকটিমকে ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশ সর্বোচ্চ সজাগ ও প্রস্তুত।” ঘটনার বিষয়ে জয়দেবপুর থানার ওসি, তৌহিদ আহমেদ জানান, পরিবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়। তারপরও পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। প্রসঙ্গত, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রাইভেটকারে তোলার কৌশলে অপহরণের ঘটনা নতুন নয়। আগেও একাধিক ভুক্তভোগী একইভাবে মুক্তিপণের টাকার বিনিময়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক এই ঘটনার পর পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার ও অভিযানে আরও কঠোর অবস্থানে রয়েছে।