বাংলাদেশ
কয়েক লাখ বাসিন্দা ভোগান্তিতে
চট্টগ্রাম ওয়াসার পাইপলাইন ফেটে পানি সরবরাহ বন্ধ
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করার সময় ওয়াসার পাইপলাইন ফেটে যাওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ গত দু’দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। পানির অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরীর কয়েক লাখ বাসিন্দা। ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন মেরামতে কাজ শুরু করেছে ওয়াসা। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক হতে দুয়েকদিন লাগতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
Printed Edition
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করার সময় ওয়াসার পাইপলাইন ফেটে যাওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ গত দু’দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। পানির অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরীর কয়েক লাখ বাসিন্দা। ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন মেরামতে কাজ শুরু করেছে ওয়াসা। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক হতে দুয়েকদিন লাগতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত সোমবার বিকেলে নগরীর অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কের অনন্যা আবাসিক সংলগ্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলাকালে ওয়াসার সরবরাহ পাইপলাইনটি ফেটে যায়। এতে ওইদিন থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকায় পানির সরবরাহ কমতে থাকে। এরপর গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সেখানে পানির সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
পাইপলাইন ফেটে যাওয়ায় নগরীর বাকলিয়া, বহদ্দারহাট, চকবাজার, মুরাদপুর, নন্দনকানন, জামালখান, লালখানবাজার, মাদারবাড়ি, আগ্রাবাদ, জিইসি, কদমতলী, ধনিয়ালাপাড়া, নয়াবাজার, আনন্দবাজার, মোমেনবাগ, উত্তর হালিশহর, দক্ষিণ হালিশহর, ষোলশহর দুই নম্বর গেট, বায়েজিদ, অক্সিজেন, রৌফাবাদ, রুবি গেট, হিলভিউসহ অন্তত ৩০ এলাকায় পানি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া এলাকার আবাসিক ভবন মালিক মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, সোমবার বিকেল থেকে পানি কম পাচ্ছিলাম। মঙ্গলবার সকাল থেকে একেবারেই পাচ্ছি না। আমাদের ডিপ টিউবওয়েলও নেই। ভাড়াটিয়াদের জন্য বিকল্প উপায়ে পানির ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। খুব ভোগান্তি হচ্ছে।
ওয়াসার প্রকৌশলীরা বলছে, পাইপলাইন ফেটে যাওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীতে প্রায় ১৪ কোটি লিটার পানির সরবরাহ সংকট তৈরি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ বাসিন্দা। যে পাইপটি ফেটে গেছে সেটি ওয়াসার মূল পানি সঞ্চালন লাইন। এর মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কর্ণফুলী পানি শোধনাগার-১ থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয়। তারা বলছে, কুয়াইশ এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে। এতে ব্যবহৃত এক্সেভেটরের আঘাতে ৪৮ ইঞ্চি ব্যাসের মূল সঞ্চালন পাইপটি ফুটো হয়ে গেছে। এতে ওই পাইপ দিয়ে পানির সঞ্চালন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এর অধীনে প্রকল্পের কাজ পরিচালনা করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। প্রকল্প পরিচালক সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ জানান, এটা ছিল সেখানে লাস্ট পাইলিং এর কাজ। এর আগেও দুটি পাইলিং করা হয়েছে। ভূগর্ভে পাইপের অ্যালাইনমেন্ট সঠিক ছিল না। তাই কাজ করার সময় পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাইপ মেরামতে ওয়াসা কাজ করছে। আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। যত দ্রুত সম্ভব মেরামত করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। ভূগর্ভে পাইপের অ্যালাইনমেন্ট সঠিক না থাকায় সর্বশেষ পাইলিংয়ের সময় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত দ্রুততার সঙ্গে মেরামতে পাইপলাইনটি মেরামতে ওয়াসাকে সহযোগিতা দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, কুয়াইশ এলাকায় পাইপলাইনের অবস্থান ও নকশা তাদের দেওয়া হয়েছিল। এরপরও দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন মাটি খনন করে পাইপলাইনটি মেরামতে করা হচ্ছে। বুধবার রাতের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ করার সময় দুর্ঘটনাবশত পাইপ ভেঙেছে। আজ সকালে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ওই পাইপলাইন থেকে সব পানি রিলিজ করে তারপর মেরামতের কাজ শুরু করতে হয়েছে।