স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ কর্তৃক উদ্ভাবিত প্রযুক্তির উপর কৃষকদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্সের সেমিনার কক্ষে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়। গাকৃবির বহিরাঙ্গন কার্যক্রম দপ্তরের আয়োজনে এবং পরিচালক, বহিরাঙ্গন কার্যক্রম, প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিন-এর সভাপতিত্বে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ছিল মৃত্তিকার গুণাগুণ উন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই কৃষি উৎপাদন নিশ্চিত করা এবং গবেষণাগারে উদ্ভাবিত আধুনিক প্রযুক্তিগুলোর মাঠপর্যায়ে বাস্তব প্রয়োগে কৃষকদের দক্ষ করে তোলা।
বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভিসি, প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি অনুষদ ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন, পরিচালক (ছাত্র-কল্যাণ), পরিচালক (আইকিউএসি) এবং মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
গাজীপুর সদর উপজেলা থেকে আগত ৪০ জন কৃষক এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ভিসি বলেন, “প্রযুক্তি যদি মাঠে পৌঁছাতে না পারে, তবে গবেষণার সার্থকতা সীমিত থেকে যায়। কৃষকের হাতেই প্রযুক্তির চূড়ান্ত প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।”
এরপর মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বিশেষজ্ঞরা একে একে বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির “আর্সেনিক দূষণ ও প্রতিকার” বিষয়ে নতুন প্রজন্মের আর্সেনিক ফিল্টার প্রযুক্তির কার্যকারিতা ও ব্যবহার তুলে ধরেন। অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি “বায়োচার” নিয়ে বলেন, “ডলোচুনের মতো কার্যকরী এই উপাদান মৃত্তিকায় জৈব পদার্থের ভারসাম্য বজায় রেখে ফলন বাড়াতে সক্ষম।”
এছাড়া, প্রফেসর ড. মো. সাইফুল আলম তাঁর উপস্থাপনায় আর্সেনিক সহিষ্ণু ধানের জাত নির্বাচন ও আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী অংশে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রায় ৮০ ভাগ জমির মাটি এসিডিক। সেখানে সুপারিশকৃত মাত্রায় ডলোচুন প্রয়োগ করে বছরে ৫০-৬০ লক্ষ টন অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন সম্ভব।
এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গবেষণার ফলাফলকে মাঠপর্যায়ের কৃষকের কাছে পৌঁছে দিয়ে আধুনিক ও টেকসই কৃষির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।