ভারতীয় অর্থায়নে প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসকারী চারুকলা ভবন নির্মাণ প্রকল্প বাতিলের দাবি এবং জাহাঙ্গীরনগরের পরিবেশগত ও নৈতিক স্বায়ত্তশাসন রক্ষার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে ছাত্র অধিকার পরিষদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের বরাবর এ স্মারকলিপি পেশ করে সংগঠনটি।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র পরিকল্পিত আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, যার হৃদয়জুড়ে রয়েছে প্রাণ-প্রকৃতির সংরক্ষণ। অথচ বর্তমানে যে চারুকলা ভবন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ ও প্রকৃতি বিনষ্ট হবে এবং টেকসই উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, এই প্রকল্পের অধীনে যে স্থানে ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সেখানে বিশাল পরিসরে গাছ কাটা, জীববৈচিত্র্য নষ্ট ও পানির স্তর কমার শঙ্কা রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই পরিকল্পনা ও পরিবেশবাদী অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হবে। প্রকল্পটি ‘পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (EIA)’ ছাড়াই, সুপরিকল্পনা ও স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বলেও দাবি করা হয়।
স্মারকলিপিতে ছাত্র অধিকার পরিষদ তাদের ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো—১. চারুকলা ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানের পরিবেশগত মূল্যায়নসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে। ২. প্রকল্পটি বাতিল করে পুনরায় পরিবেশবান্ধব ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন পরিকল্পনা নিতে হবে। ৩. নির্মাণ প্রকল্পে গাছ কাটা, জলাভূমি ভরাট বা জীববৈচিত্র্য ধ্বংস বন্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। ৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে সকল ছাত্রসংগঠন, পরিবেশবিদ ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে স্বচ্ছ কমিটি গঠন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বশীল অবস্থান গ্রহণ করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন—এমন প্রত্যাশা করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।