এইচএসসি পরীক্ষার বেশকিছু কেন্দ্র নির্ধারণে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে ডেমরার ডজনখানেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অভিযোগ তুলেছেন। তারা জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ডেমরা কলেজ কেন্দ্রে ১৬ শতাধিক পরীক্ষার্থীর আসন নির্ধারণ করা হয়েছে। যা কেন্দ্রের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। অথচ ৬ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান দনিয়া কলেজে আসন নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ১২শ’ জনের।
এছাড়া কেন্দ্র নির্ধারণেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, দনিয়া কলেজ থেকে অর্ধকিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ কে স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ কিলোমিটার দূরবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডেমরা কলেজে। এছাড়া এক যুগেরও বেশি সময় যাবৎ শ্যামপুর মডেল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ৫ কিলোমিটার দূরের প্রতিষ্ঠান ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের আসন নির্ধারণ করা হচ্ছে, এবারো হয়েছে। এখানে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত আসন বিন্যাস করা হয়েছে। এই কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন মাহবুবুর রহমান ডিগ্রী কলেজের শিক্ষকগণ পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রে অবস্থানসহ তাদের পরীক্ষার্থীদের নানাবিধ সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, শ্যামপুর মডেল স্কুলের কেন্দ্র প্রধানের নির্দেশক্রমে পর্যবেক্ষণগণ পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র সমাধানে সহযোগীতা করেন। এছাড়া এই কেন্দ্রে পর্যবেক্ষক ব্যতীত ভূয়া পরিচয়ে অনেকেই দায়িত্ব পালন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যারা কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত নন। অভিভাবকরা বলেন, অর্ধকিলোমিটার দূরের প্রতিষ্ঠান শ্যামপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ এর কেন্দ্র শ্যামপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজকে না দিয়ে ৫ কিলোমিটার দূরের এবং যোগাযোগ প্রতিকূল প্রতিষ্ঠান ড. মাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে আসন প্রদান কোনো ভাবেই আইনসঙ্গত নয়।
এদিকে বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন প্রত্যবেক্ষকের (ইনভিজিলেটর) দায়িত্বপালন করার কথা। এ হিসেবে ডেমরা কলেজ কেন্দ্রে ১৬শ’ পরীক্ষার্থীর জন্য ৮০ জন প্রত্যবেক্ষক প্রয়োজন। ডেমরা কলেজে নিয়মিত পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা আছে ৫০ জনের। অতিরিক্ত ৩০ জন পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্বপালন করবেন এ কে স্কুল এন্ড কলেজসহ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ, যা বিধি বহির্ভূত।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন, সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজকে বিশেষ সুবিধা দিতেই বছরের পর বছর ধরে এখানে তাদের কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রতিটি পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ করে দেন। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেন বলেও অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্টরা। অথচ অন্য কলেজের শিক্ষার্থীদের অনেক দূরের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে দুই রকম নিয়মের কারণে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।