ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় দেড় ঘণ্টার সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে ক্লাস করা দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইডিকার্ড নিয়ে ঝামেলা থেকে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য, তিন দিন আগে উদ্ভাসের আইডি কার্ড নিয়ে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এ নিয়ে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে মঙ্গলবার দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের সূত্রপাত। গতকাল বেলা সাড় ১২টার পর সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ রাস্তার মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। দুই পক্ষই পরস্পরের দিকে ঢিল ছুড়তে থাকে। দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের কারণে মিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ দুই পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নেয়। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা তখন নিজেদের কলেজের সামনে চলে যায়। আর সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা চলে যায় তাদের এলাকায়। আমরা দুই কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করব যেন তাদের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে থাকে। রাস্তাঘাটে যেন কোনো ঝামেলা সৃষ্টি না হয়, আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। তিনি বলেন, এসব ঘটনা এখানে প্রায়ই ঘটে, ছোট ছোট বিষয় থেকে এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটে, আমরা দুই কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলব। এখানে এ ধরনের ঘটনা কোনো কারণ ছাড়াই ঘটে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয় নিয়ে আমরা আগেও আলোচনা করেছি। কিন্তু এবার আলোচনা করতে হবে কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, এর মূলে যেতে হবে। এ দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কারণে জনগণের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তারা যখন মুখোমুখি অবস্থান নেয়, তখন যে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই।

গতকাল সংঘর্ষের কারণ জানতে চাইলে মাসুদ আলম বলেন, পূর্বের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকের এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। আমরা জেনেছি উদ্ভাস কোচিং সেন্টারে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে। গত তিন দিন আগে সেখানকার আইডি কার্ড নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয় এবং চড়-থাপ্পরের ঘটনা ঘটে। সেটাকে কেন্দ্র করে গত পরশু দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছিল, পরে সেটা শেষ হয়ে যায়। তখন আমরা মনে করেছিলাম এটা এখানেই শেষ। কিন্তু তারা গতকালকে আবার নতুন করে শুরু করেছে। তবে ওই সময় ওইখানে যে শিক্ষার্থীরা ছিল, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আমরা শুনেছি আজকের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে, তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।

নিউ মার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বেলা ২টার দিকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।

সিকি কিলোমিটার দূরত্বে ঢাকার এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। নানা তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রায়ই তাদের সংঘাতে জড়ানোর খবর সংবাদের শিরোনাম হয়। গত ১৮ মার্চ দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘার্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন। তার আগে ২০ ফেব্রুয়ারি, এবং ১৯ জানুয়ারিও সংঘর্ষ হয় দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে।