দেশের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসমূহের দীর্ঘদিনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সংকট নিরসনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ ও অনতিবিলম্বে তাদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “দেশের বিভিন্ন সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসমূহে (ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট) ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং একাডেমিক শাটডাউনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তা প্রকৌশল শিক্ষার দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও অব্যবস্থার বিরুদ্ধে একটি ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদ। আমরা এই ন্যায্য আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি এবং শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, পর্যাপ্ত গবেষণা ও ল্যাব সুবিধার অভাব, Outcome Based Education (OBE) বাস্তবায়নে ব্যর্থতা ও দীর্ঘ সেশনজটসহ নানা সমস্যায় শিক্ষার্থীরা জর্জরিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনতায় দ্বৈত কাঠামোতে পরিচালনার কারণে একদিকে প্রশাসনিক জটিলতা, অন্যদিকে একাডেমিক অস্বচ্ছতা প্রকৌশল শিক্ষার গুণগত মানকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (IEB)–এর স্বীকৃতি লাভের জন্য যে মৌলিক শর্তাবলি রয়েছে, বিশেষত OBE-এর সফল বাস্তবায়ন—তা বর্তমান কাঠামোর আওতায় সম্ভব নয়। ফলে শিক্ষার্থীরা পেশাগত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”

নেতৃবৃন্দ আরও যোগ করেন, “সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ যদি এই সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ আরও তীব্রতর হবে। আমরা চলমান আন্দোলনে পুলিশের অপ্রয়োজনীয় বলপ্রয়োগ, শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও হয়রানির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে দমন নয়, বরং সংলাপের মাধ্যমে যথাযথ সমাধান করা দরকার। চলমান সংকট নিরসনে দ্রুত বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণে সরকার ব্যর্থ হলে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা হতে পারে, যার দায়ভার সম্পূর্ণভাবে সরকারকেই নিতে হবে”