প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া স্মারকলিপিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর জন্য ৫টি কারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল রোববার তারা ঢাকায় এসে এই স্মারকলিপি দেন। ভিসির অপসারণ দাবিতে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। এরপরেও কুয়েটে ছাত্রদলের ফর্ম বিতরণের বিরুদ্ধে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেয়। মিছিলে কুয়েট ছাত্রদলের কর্মীরা হঠাৎ করে এসে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কুয়েট ছাত্রদল ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। হামলায় কুয়েটের দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয় এবং চার ঘণ্টা যাবৎ এই হামলা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। পরে সব শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে। আল্টিমেটাম দেওয়ার পরেও শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ না হওয়ায় ভিসির অপসারণের দাবি জানানো হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রাজনীতি নিষিদ্ধ কুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতি অনুপ্রবেশের অপচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকা; ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্তৃক আক্রমণ থেকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া; দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পরও ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করা; উপযুক্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও চিহ্নিত কুয়েট ছাত্রদল এবং স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে স্বীকার না করা; ভিসির কাছে ওই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দেওয়া ছয় দফা দাবি পূরণের পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার পরও দাবি সম্পূর্ণরূপে মেনে না নেওয়া।
এতে আরও বলা হয় 'কুয়েটের সব শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ভিসিকে বর্জন করা হয়েছে এবং অপসারণের জোর দাবি জানানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের অনতিবিলম্বে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হচ্ছে। অভিভাবকহীন ও অনিরাপদ কুয়েটে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় চলমান করার জন্য অতি দ্রুত নতুন ভিসি নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্তৃক আক্রমণ থেকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শরিফুল ইসলামেরও অপসারণ দাবি করেও প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি দিকে আসা এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, বিকেল ৩টার দিকে আমাদের পাঁচজনের প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আধঘণ্টা তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমরা রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর আস্থা রাখতে চাই। আশা করি প্রধান উপদেষ্টা অতিদ্রুত আমাদের দাবি মেনে নিয়ে আমাদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যাওয়া ব্যবস্থা করে দেবেন।