ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে “বর্ণষৈম্য থেকে গণতন্ত্র : বাংলাদেশের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার অন্তর্দৃষ্টি” শীর্ষক বিশেষ সেমিনার গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও ভবিষ্যৎ কর্মনীতি নিয়ে আলোচনা হয়।

সেমিনারে মোহাম্মদ ভাবা (দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক সংসদ সদস্য ও আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের আলোচক) বলেন, স্বপ্ন পূরণ করার জন্য গঠনমূলক রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে, ভাঙনমূলক নয়। তিনি অতীত সংগ্রামের শিক্ষা থেকে শেখা এবং সামাজিক ঐক্য বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন।

ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেন, বাংলাদেশে প্রয়োজন ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন নয়, বরং ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন, যেখানে ভুক্তভোগীদের কণ্ঠস্বর শোনা হবে এবং সত্যের মাধ্যমে ভিক্টিমরা পুনর্বাসনের পথে এগোবে। তিনি জানান, ডাকসু ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে এমন একটি নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছে, যেখানে অভিজ্ঞতা মুক্তভাবে শেয়ার করে সত্য, দায়বদ্ধতা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা হবে।

সেমিনারে সাদিক কায়েম বাংলাদেশে একটি ট্রুথ এন্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান জানান।

রোলফ মেয়ার (দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল পার্টি সরকারের প্রধান আলোচক) বলেন, সংবিধানের মাধ্যমেই আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সংবিধান ও প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তিশালীকরণকে একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি হিসেবে উপস্থাপন করেন।

শরীফ বান্না (চেয়ারম্যান, জাগরণ ফাউন্ডেশন) বলেন, ন্যায়বিচার ও সহমর্মিতার ভিত্তিতেই দেশকে নতুনভাবে সাজাতে হবে; সহমর্মিতার মাধ্যমে আশার সৃষ্টি হয়। সেই আশাই ছিল স্বৈরাচারকে প্রত্যাখ্যান করানোর মূল শক্তি, সেই একই আশা নিয়ে দেশ পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।

সাইমা হক বিদিশা (প্রোভিসি প্রশাসন, ঢাবি) বলেন, পারস্পরিক আলোচনা ও জ্ঞান-বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশই উপকৃত হতে পারবে।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা সমসাময়িক রাজনৈতিক সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে সাংবিধানিক কর্তৃত্ব, সামাজিক সংহতি ও আরোগ্যপূর্ণ পুনর্গঠনের ওপর জোর দেন এবং সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট নীতি-সংরক্ষণের মাধ্যমে এগিয়ে চলার আহ্বান জানান। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।