ডাকসু নির্বাচন ঘিরে যারা দিল্লীর বয়ান শোনাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা তাদের লালকার্ড দেখাবেন’ বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রশিবিরের ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী ও শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম। গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি। সাদিক কায়েম বলেন, এক বছরজুড়ে ও জুলাই আন্দোলনে আমাদের প্যানেলের সদস্যদের যে শিক্ষার্থীবান্ধব ভূমিকা, আমাদের প্যানেলে যারা আছেন, তাদের যে যোগ্যতা, তাদের যে দক্ষতাÑতাতে শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। আগামী ৯ তারিখ আমরা ব্যালট বিপ্লব দেখবো। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আকাক্সক্ষাই আমাদের আকাক্সক্ষা। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করছি। কিন্তু আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বড় অংশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোনও ভাবনা নেই। তারা দিল্লির বয়ান, বাকশালী বয়ানের ক্যাসেট বাজাচ্ছেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, আমাদের ছবি বিকৃতির জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু তিন দিন পার হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ এর ছবি-ভিডিও সবই আছে। এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ বলেন, যারা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাদের জবাব শিক্ষার্থীরা ভোটের মাধ্যমে দেবেন। রিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে আমাদের নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হতো। এখন অন্তত কেউ আদালতে যাচ্ছেন। যিনি রিট দায়ের করেছেন, তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে।
ফরহাদ আরও বলেন, এটা আদালতের বিবেচনাধীন বিষয়। এটার মীমাংসা আদালতেই হবে। কিন্তু রিট আরও আগে না করে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে কেন করেছে, সেটি নিয়ে আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি। এটা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হতে পারে। তবে এই দ্বিমতকে আমরা শ্রদ্ধা করি।
ছাত্রদলের প্রার্থীর অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরসমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল– সমর্থিত প্যানেল। গতকাল রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে রিটার্নিং দপ্তরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির পরিচালিত ফোকাস কোচিং থেকে ঢাবির প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে ছাত্রশিবিরসমর্থিত প্যানেলের ভিপি, জিএস (সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থীসহ অনেকে বক্তৃতা দেন এবং শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চান।
আবিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধির ৯(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারকালে কোনো ভোটারকে খাদ্য পরিবেশন করা যাবে না। ৯(গ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ভোটারকে উপঢৌকন বা বকশিশ দেওয়া যাবে না। কিন্তু শিবিরসমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা সব নিয়ম ভঙ্গ করে শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করছেন।
এই ভিপি প্রার্থী আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ গ্রুপ নিয়ে আমরা তৃতীয়বার অভিযোগ দিয়েছি। কারণ, এ গ্রুপগুলো নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নষ্ট করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নাম পরিবর্তন করে তারা কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় চার দিন ছুটি ঘোষণা করা হলেও শুক্র ও শনিবার মিলে মোট ছয় দিন বন্ধ থাকছে। এতে অনাবাসিক ছাত্র-ছাত্রীরা ভোট দানে নিরুৎসাহিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন আবিদুল ইসলাম।