ববি রিপোর্টার : অবকাঠামো উন্নয়নসহ তিন দফা দাবিতে ৬ দিনের বিরতির পর ফের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে এক ঘণ্টার জন্য তারা এ কর্মসূচি পালন করে। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে থ্রি-হুইলারসহ বিভিন্ন পরিবহনের দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
অবকাঠামো উন্নয়ন, ভূমি অধিগ্রহণ ও পরিবহন সংকট নিরসনের দাবিতে টানা ৩৫ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরে আন্দোলন সীমাবদ্ধ থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ শুরু করেন।
টানা আট দিনের অবরোধের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনার আহ্বান জানালে শিক্ষার্থীরা তিন দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেন। তবে আশানুরূপ কোনো সমাধান না মেলায় পুনরায় সংবাদ সম্মেলন করে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তারা। সেই আল্টিমেটামেরও কোনো জবাব না পেয়ে ৩৬ ঘণ্টা পর ফের মহাসড়ক অবরোধে নামে শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নবনির্মিত নভোথিয়েটার ভবনে “একাডেমিক ভবন-০৩” এবং বিটাক ভবনে “আবাসিক হল” লেখা দুটি ব্যানার টানান শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রকাউন্সিল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যায়।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী অমিও ম-ল বলেন,
“বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বাস দিলেও আমরা আশ্বস্ত নই। আমরা চাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি সরাসরি হস্তক্ষেপ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিক। শিক্ষার প্রতি রাষ্ট্রের যে উদাসীনতা তার প্রমাণ আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি। রাষ্ট্র ও প্রশাসনের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, আবাসন ও পরিবহন নিশ্চিত করা। কিন্তু শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে দেখার কারণে সর্বত্রই এই উদাসীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।”
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,
“বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান আন্দোলনের দ্রুত সমাধান না হলে প্রধান উপদেষ্টাকে ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না। আমরা অবকাঠামো আন্দোলনসহ তিন দফা দাবির দ্রুত ফলাফল চাই। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার কোনোভাবেই কর্তৃপক্ষ এড়িয়ে যেতে পারে না।”
উল্লেখ্য, আজ দুপুর ১২ টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক পুনরায় অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা জানান আগামীকালের কর্মসূচির মাধ্যমেই তাদের চূড়ান্ত ফলাফল নিশ্চিত হবে।