ইবি সংবাদদাতা: জমকালো আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) থিওলজি অনুষদের অন্তর্গত আল-কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস উদ্বোধন ও নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় বিভাগটির ২০৩ নম্বর কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন মিঝির সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক ড. খান মুহাম্মদ ইলিয়াসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সময় প্রধান অতিথি ছিলেন ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মুহাম্মদ নসরুল্লাহ বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী, থিওলজি অনুষদের ডিন ড. আ.ব.ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, বিভাগের অধ্যাপক ড. এ.বি.এম ফারুক, ড. আ.ফ.ম আকবর হোসাইন, ড. হাফেজ আবু নোমান মোঃ এরশাদ উল্লাহ,, ড. মোহাঃ লোকমান হোসেন, ড. মোহাঃ জালাল উদ্দিন, ড. মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, ড. মোঃ আমিনুল ইসলাম, ড. শেখ এ.বি.এম. জাকির হোসেনসহ বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের ফুল, ব্যাগ, নোটপ্যাড ও কলম দিয়ে বরণ করা হয়। তার পর একে একে শিক্ষকদের স্বাগত বক্তব্য, বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বক্তব্য প্রদান করা হয়। সবশেষে অতিথিবৃন্দের বক্তব্য এবং সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে প্রথম পর্ব সমাপ্ত হয়। এ সময় তাদের এক বছরের পূর্ণ পরীক্ষার সময়সূচি সহ একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রদান করা হয়।
অনুভূতি প্রকাশ করেন আবার নবাগত শিক্ষার্থীরা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিভাগ আল-কুরআন এণ্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। ভর্তির পর থেকেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম কবে আমাদের ক্লাস শুরু হবে, কবে যাব প্রিয় ক্যাম্পাসে। আজ সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটল। আমার স্বপ্নের বিভাগ আজ আন্তরিকভাবে আমাদের প্রথম ক্লাসে বরণ করে নিয়েছে। স্যারদের স্নেহ, আন্তরিক অভ্যর্থনা এবং ডিপার্টমেন্টের বড় ভাইদের ভালোবাসা, সব মিলিয়ে দিনটি আমার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রথম দিনেই একাডেমিক ক্যালেন্ডার হাতে পাওয়া সম্পর্কে বলেন, প্রথম দিনেই আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে প্রথম বর্ষের একাডেমিক ক্যালেন্ডার, যেখানে ক্লাস শুরুর তারিখ থেকে শুরু করে পরীক্ষা ও ফল প্রকাশের সময়সূচি পর্যন্ত বছরের পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা উল্লেখ রয়েছে। এটি পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত, কারণ একদিকে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সময়মতো পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবো, অন্যদিকে সেশনজটের কোনো দুশ্চিন্তাও থাকবে না। এজন্য আমার বিভাগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং আশা করি এই বিভাগে আমার শিক্ষা ও জীবন এক নতুন আলোয় আলোকিত হবে, ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন মিঝি বলেন, আল-কোরআন বিভাগ যেমনিভাবে সারা দেশের মেধাবী মাদ্রাসা ছাত্রদের একটি সম্মেলন, একটি গ্যাদারিং করতে পেরেছে, ঠিক তেমনিভাবে ভবিষ্যৎ একটিভিটিজ গুলো, একাডেমিক এক্টিভিটিজ গুলোতে তারা তাদের মর্যাদা, তাদের অবস্থান, তাদের মেধা এবং যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের উপরে তাদের যোগ্যতার বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হবে ইনশাল্লাহ। আমরা আপনাদেরকে এই প্রত্যাশাও দিতে চাই, যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় একটি উন্মুক্ত জায়গা, এখানে উন্মুক্ত চিন্তার বিকাশ ঘটে, উন্মুক্ত চিন্তার চর্চা হয়। এই উন্মুক্ত চিন্তার চর্চার সাথে আধুনিকতা এবং ইসলামের সমন্বয় ঘটিয়ে আল-কোরআন ডিপার্টমেন্ট সেই ধারণা, ইন্টেগ্রেশন ধারণা মডার্নিজম প্লাস ইসলামিজম, দুটোর একটি সমন্বয় ঘটিয়ে আল-কোরআন বিভাগের ছাত্ররা সামনে অগ্রসর হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত জায়গায় তারা হারিয়ে যাবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকিব মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ বলেন, “আমরা যদি আমাদের ভবিষ্যৎকে উন্নত করতে চাই এবং লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই, তাহলে প্রথমেই আমাদের সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। সময়ের সাথে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আগের যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ভিন্ন। তোমরা প্রাইমারি, হাইস্কুল, মাদ্রাসা, হায়ার সেকেন্ডারি-এসব ধাপ অতিক্রম করে এখানে পৌঁছেছো। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সবসময় নতুন কিছু চিন্তা করবে এবং নতুনত্ব বের করার চেষ্টা করবে। এই পৃথিবী হলো প্রতিযোগিতার মঞ্চ—তোমরা প্রত্যেকেই একজন প্রতিযোগী। তাই শুরুটা হতে হবে দৃঢ় ও ইতিবাচক। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম মূল লক্ষ্য হলো ইসলামী শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।"
উল্লেখ্য, আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগ গুলোর একটি। বিভাগ থেকে ৩৪ টি স্নাতক সমাপ্ত করেছে।