হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে নিজের রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ জালালের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এই মামলা হয়।
এর আগে একই অভিযোগে তাকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আজ বুধবার দুপুরের দিকে শাহবাগ থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামি জালালকে ইতিমধ্যে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ তার রুমমেট রুমমেট রবিউল হককে ছুরিকাঘাত করেন। আহত রবিউল হক ২০১৮-১৯ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
প্রাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। জালাল আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম বিভাগের শিক্ষার্থী। হল প্রাধ্যক্ষ বলেন, এ ধরনের নৃশংস কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে হল থেকে বহিষ্কার করা হলো। তাঁর ছাত্রত্ব বাতিলেরও ব্যবস্থা করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলমান বাগ্বিতণ্ডার জেরে জালাল আহমেদ রুমমেট রবিউল হককে ছুরিকাঘাত করেছেন। আহত রবিউল এখন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবিউল হক বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে জালাল কক্ষে এসে লাইট জ্বালায় এবং শব্দ করতে থাকে। ফলে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তখন আমি বলি, সকালে আমাকে লাইব্রেরিতে যেতে হবে, অযথা শব্দ করলে ঘুমে সমস্যা হচ্ছে। এতে সে রেগে গিয়ে আমাকে অবৈধ, বহিরাগত বলে। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে আঘাত করে। পরে কোনোক্রমে আমি আত্মরক্ষা করি।’
এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদকে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ বলেছেন, এ ঘটনায় জালাল আহমদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে এ ঘটনার কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও জানান তিনি।
জালাল আহমদের বিরুদ্ধে আগের একাধিক অভিযোগের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, এই মুহূর্তে আমি বলতে পারছি না। তবে আজকের ঘটনার পর সব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।’
এ ঘটনায় হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘আমি নিজেও শিক্ষার্থীদের দেখেছি, হল প্রশাসন, বিশেষ করে প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছে তারা। তবে তারা যদি বুধবার কোনো এক সময়ে উপাচার্যের সঙ্গে বসে তাদের দাবিদাওয়া পদ্ধতিগতভাবে জানায়, সে ক্ষেত্রে তাদের দাবির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’