বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক সংসদ সদস্য, ড. এ, এইচ, এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, আল- কুরআন এমন একটি গ্রন্থ, যা সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হলে মানুষের সত্যিকার কল্যাণ আসবে। তাই কুরআনের আলোকে সমাজ গড়ার আন্দোলন ও সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্রদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি সমাজ চাই যেখানে থাকবে না অন্যায়-অবিচার। সেখানে প্রতিষ্ঠিত হবে শোষণহীন ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। কুরআনের আদর্শে গড়ে ওঠা ছাত্রসমাজই পারে রাষ্ট্র বিনির্মাণের নেতৃত্ব দিতে। আজকের ছাত্র সমাজ আগামীদিনে দেশ ও জাতির নেতৃত্ব প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নিজেদেরকে তারা কুরআনের গুণে গুণান্নিত করে ন্যায়, মানবিকতা ও আল্লাহভীতির ভিত্তিতে একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনে পথপ্রদর্শক হবে।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে কুরআন অলিম্পিয়াড ও বইপাঠ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শাখা সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে, অর্থ সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন শাখা সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক আরবি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. গিয়াসউদ্দিন তালুকদার বলেন, পবিত্র কুরআনই সর্বশেষ কিতাব, এরপর আর কোনো কিতাব আসবে না। সুতরাং কুরআন ব্যতীত আমাদের আর কোনো পথপ্রদর্শনকারী গ্রন্থ নেই। এই পৃথিবীতে যখন সত্য এসেছে, মিথ্যা, জুলুম বিতাড়িত হয়েছে। লক্ষ লোকের ফুৎকারে যেমন সূর্যের আলো ম্লান হয় না তেমনি কুরআনের নূর ম্লান করার ক্ষমতা পৃথিবীর কোনো শক্তির নেই। আল্লাহ তায়া’লার সাহায্য এই পৃথিবীতে যাদের কাছে আসে, তাঁরাই পৃথিবীতে বিজয়ী হয়।

সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির জ্ঞানের প্রতিযোগিতা সবসময় ই জারি রেখেছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যদি এধরণের আয়োজন না হয়, তাহলে জাতি পথ হারানোর দিকে অগ্রসর হবে। আমরা চাই, আমাদের ক্যাম্পাসের ভাই-বোনেরা নৈতিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক।কুরআনের নৈতিকতা নিয়ে যদি একজন শিক্ষার্থী নিজেকে গড়ে তুলতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে সে কখনও দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ হবে না। আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অংশ হিসেবে এ ধরনের আয়োজন জারি রাখবো ইনশাআল্লাহ।

উদ্বোধনী বক্তব্যে মোহাম্মদ আলী বলেন, 'মাহে রমযান উপলক্ষে পবিত্র কুরআন অলিম্পিয়াড ও পলাশী দিবস উপলক্ষে বইপাঠ প্রতিযোগিতা'র মাধ্যমে আমরা যে প্রয়াস চালিয়েছি, তা মূলত একজন আদর্শ ছাত্র ও সচেতন মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে কুরআনের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রচেষ্টা। এই প্রতিযোগিতা কেবল একটি আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অংশ। যার মাধ্যমে আমরা তরুণ প্রজন্মকে কুরআনের আলোয় আলোকিত করতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, যে ছাত্র কুরআনের বাণীকে হৃদয়ে ধারণ করে, চিন্তায় ও কর্মে তা বাস্তবায়ন করে, সে-ই হবে আগামীর বাংলাদেশে ভবিষ্যত সময়ের নৈতিক নেতৃত্ব।

বিকাল ৩ টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠান সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের পর পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে ৫.৩০ এ সমাপ্ত হয়। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।